কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে একটি কেন্দ্রে প্রথম ঘণ্টায় ৭৭টি ভোট পড়েছে। এ কেন্দ্রে ভোটারসংখ্যা ৩ হাজার ৩১৪। ভোট পড়ার হার ২ দশমিক ৩২।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ (পশ্চিম পাশের ১০তলা ভবন) কেন্দ্র ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। কেন্দ্রটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ধীরগতিতে কাজ করায় ভোট গ্রহণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনরত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টরা।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মেয়র প্রার্থী তাহসীন বাহারের সমর্থকেরা কেন্দ্রটির সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন। কেন্দ্রের ভেতরে বিভিন্ন কক্ষের সামনেও তাঁর অনুসারীরা গলায় ব্যাজ ঝুলিয়ে অবস্থান করছেন। তাহসীন ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষের কাউকে কেন্দ্রের সামনে বা আশপাশে দেখা যায়নি।
তাহসীন বাহার কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনের মেয়ে।
নারী ভোটারদের এ কেন্দ্রে ৯টি ভোটকক্ষ। ৯টার দিকে এসব কক্ষে গিয়ে জানা গেছে, এক ঘণ্টায় ১ নম্বর কক্ষে প্রথম ১৮টি, ২ নম্বর কক্ষে ২, ৩ নম্বরে ৯, ৪ নম্বরে ৩, ৫ নম্বরে ৩, ৬ নম্বরে ৬, ৭ নম্বরে ১৪, ৮ নম্বরে ১৫ ও ৯ নম্বরে ৭টি ভোট পড়েছে।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তাহসীন বাহারের সমর্থকেরা কেন্দ্রটির সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন। কেন্দ্রের ভেতরে বিভিন্ন কক্ষের সামনেও তাঁর অনুসারীরা গলায় ব্যাজ ঝুলিয়ে অবস্থান করছেন। অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষের কাউকে কেন্দ্রের সামনে বা আশপাশে দেখা যায়নি।
তথ্য সংগ্রহের সময় দেখা গেল, কিছু কক্ষে ইভিএম ধীরগতিতে কাজ করছে। এতে ভোটারদের বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
কেন্দ্রের একটি কক্ষে আঙুলের ছাপ দেওয়ার পর পাঁচ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করছিলেন সামিয়া শাহরিয়ার। কিন্তু তাঁর ভোট গৃহীত হচ্ছিল না। পরে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইভিএমে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
আরেকজন ভোটার মনি রানী চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঠিকভাবেই ভোট দিতে পেরেছেন, সমস্যা হয়নি।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ইভিএমের সমস্যা একটি কক্ষ থেকে হচ্ছে, তাঁকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো সমস্যা নেই।
কেন্দ্রটির সামনে একটা খেলার মাঠ রয়েছে। সকাল থেকেই তাহসীন বাহারের সমর্থকদের গলায় ব্যাজ ঝুলি মাঠে অবস্থান করতে দেখা গেছে। কেন্দ্রের প্রবেশমুখেও রয়েছেন তাঁর সমর্থকেরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের একাধিকবার মাঠ থেকে এসব সমর্থককে সরিয়ে দিতে দেখা গেছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেয়র পদের উপনির্বাচনে এবার মোট ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ২৭৪ ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ১৮২ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ২ জন।
সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্র ও ৬৪০টি ভোটকক্ষে দায়িত্ব পালন করছেন ১০৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৬৪০ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ২৮০ জন পোলিং এজেন্ট।
আচরণবিধি প্রতিপালনে ২৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে আছেন। প্রতি ৩ ওয়ার্ডে রয়েছেন একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ১০৫ কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১২ প্লাটুনে ৪৫০ জন বিজিবি সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। র্যাবের ২৭টি দলে ৯৩৯ জন, পুলিশের ২৭ মোবাইল টিমে ১ হাজার ৩৩৯ ও প্রতি তিনটি ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের নয়টি স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে রয়েছে। এ ছাড়া দুটি থানার দুটি টিম রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে গতবারের মতো নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা লাগানো না হলেও ১০৫ কেন্দ্রের মধ্যে ২২টি ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা আছে। ভোটার দিনের পরিবেশ নিয়ে ভোটারদের শঙ্কা থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, পুরো সিটি এলাকা থাকবে নিরাপত্তার চাদরে।’
ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে দুজন করে পুলিশ ছিল, এখানে থাকবে পাঁচজন করে। এ ছাড়া আনসার ১২ জন। সব মিলিয়ে প্রতি কেন্দ্রে ১৭ জনের বেশি ফোর্স থাকবে।’