সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা সৃষ্টির পাঁয়তারায় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিসহ (নেছারাবাদ) দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ বুধবার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে এসব দাবি জানান দুই দলের নেতারা।
সিপিবি ও বাসদের নেতারা এ সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ তুলে ধরেন। এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটতে পারে, সে জন্য কঠোর অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ করেন তাঁরা। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ও বাসদের সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন আজ সকালে।
সিপিবি-বাসদ নেতাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, তিনি সুনামগঞ্জের ঘটনায় সেখানকার পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ-ও জানান, অনেক জায়গার ছোটখাটো ঘটনার খবর যথাসময়ে তাঁরা পান না। তবে খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছেন এবং নেবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার সচেষ্ট। এসব বিষয় সবার সহযোগিতা চান তিনি।
সিপিবি ও বাসদের নেতারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানান, সুনামগঞ্জসহ বেশ কিছু এলাকার প্রকৃত ঘটনা যাতে সামনে না আসে, তার জন্য অনেক জায়গায় অলিখিত বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে নানা ধরনের ঘটনা যুক্ত করেই ‘সত্য-মিথ্যা’ খবর পরিবেশিত হতে থাকবে। এসব ঘটনার নানা ডালপালা গজাবে, যা মোটেই কাম্য নয়। তাই সরকারের পক্ষ থেকে প্রকৃত ঘটনা সবার সামনে তুলে ধরে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার করতে হবে।
দল দুটির নেতারা আরও বলেন, তাঁরা মনে করেন, সরকার দৃঢ় অবস্থান নিলে কোথাও এ ধরনের হামলা ঘটবে না। এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর বার্তা দিতে হবে। সবার সহযোগিতা নিয়ে জনগণের, বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের ঘটনার শ্বেতপত্র প্রকাশসহ হামলায় জড়িত ও দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। আর পিরোজপুরের নেছারাবাদে বিভিন্ন ব্যক্তি, উপাসনালয় ও কলেজে হামলার দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের চিহ্নিত ও শাস্তির দাবি করেন।
সিপিবি ও বাসদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনাকে দেশ-বিদেশে কেউ যেন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়েও সরকারকে সচেতন থাকতে হবে। প্রকৃত ঘটনা কখনোই আড়াল করা যাবে না। যেকোনো সংকট সমাধানে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও সচেতন ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ সময় কুমিল্লায় নবাব ফয়জুন্নেছা ও মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের ভাস্কর্যে কালি লেপনের ঘটনায় জড়িত এবং প্রতিবাদকারী আবদুর রাজ্জাকের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।