গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে এবার নতুন ভোটার হয়েছেন ৪১ হাজার ২৭২ জন। এসব ভোটারের সিংহভাগই জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। সকাল ৮ থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নগরের ৫৫, ৫৬ এবং ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে কথা হয় এমন চার নতুন ভোটারের সঙ্গে। তাঁরা প্রত্যেকেই জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রথম আলোকে।
(সোহেলী ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী, বাসিন্দা, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড)
কোনো নির্বাচনে ভোটার হতে পারাটাই আমার কাছে আনন্দের। একই সঙ্গে গৌরবের। এখন আমি বুক ফুলিয়ে বলতে পারি, নগরপিতা নির্বাচকদের ভেতর আমিও একজন। তা ছাড়া ছোটবেলা থেকেই নির্বাচন আমার কাছে আনন্দের। নির্বাচন উপলক্ষে নগরে পোস্টারের ছড়াছড়ি, প্রার্থীদের হাঁক–ডাক, এসব আমার খুব ভালো লাগে। এবার প্রথমবারের মতো ভোট দিতে এসে খুব ভালো লাগছে। বিশেষ এই যে প্রার্থীদের হইচই, একটা ভোট পাওয়ার জন্য প্রার্থীদের অনুনয়-বিনয় ইত্যাদি আমি খুব উপভোগ করছি।
(মো. রনি ইসলাম, চাকুরে, বাসিন্দা, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড)
ভোট দিতে এসে নাগরিকসত্তার প্রকৃত আনন্দ উপভোগ করছি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের দিন যতই এগিয়ে এসেছে, আমার প্রতি প্রার্থীদের তৎপরতা ততই বেড়েছে।
মুঠোফোনে কল, সামনাসামনি দেখাসহ বিভিন্নভাবে আমার খোঁজখবর নিয়েছেন, তাঁদের জন্য ভোট প্রার্থনা করেছেন। এতে আমি খুব সম্মানিত বোধ করেছি। আজ ভোটের দিন। কেন্দ্রে এসেও খুব ভালো লাগছে। ভোট দিতে আসা মানুষের লম্বা লাইন, চারদিকে প্রচারপত্রের ছড়াছড়ি, সব মিলিয়ে চারদিকে একরকম উৎসব চলছে। পাশাপাশি জীবনে প্রথম ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতাও ছিল দারুণ।
(সালমা আক্তার, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী, বাসিন্দা, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড)
কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ এলাকার। প্রায় সবাই পরিচিত। নির্বাচন উপলক্ষে সবাই আগে থেকে মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে রেখেছেন। এর মধ্যে আজ ভোট গ্রহণ উপলক্ষে সকাল থেকেই প্রায় সব প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী–সমর্থকেরা মুঠোফোনে কল করছেন।
জানতে চাচ্ছেন, কখন ভোট দিতে আসব বা আসতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না ইত্যাদি নানা বিষয়। এরপর বেলা ১১টার দিকে যখন ভোটকেন্দ্রে এলাম, তখনই শুরু হলো প্রার্থীদের টানাটানি। ছোটবেলায় অনেকবার বাবার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছি। বাবার সঙ্গেও এমনটি হতো। তখন ততটা বুঝতাম না। কিন্তু আজ ভোট দিতে এসে মনে হচ্ছে, প্রতিটা ভোট ও ভোটারের মূল্য অনেক বেশি।
(রবিউল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী, বাসিন্দা, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড)
এর আগেও সিটি করপোরেশন নির্বাচন দেখেছি। এবার নিজে ভোট দিতে এলাম। এবারের নির্বাচনের চিত্র একেবারে ভিন্ন। একটি আনন্দঘন পরিবেশ। মুঠোফোনে যোগাযোগের পাশাপাশি সবাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও সরব ছিলেন। অনেকটা জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনের আমেজ লক্ষ করা যাচ্ছে। নিজের পছন্দমতো ব্যক্তিকে ভোট দিতে পেরেছি। আশা করছি, নতুন কিছু হবে।