ভোট, আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাদির কল্লোল
নির্বাচনের প্রচারণায় বিভিন্ন জায়গায় আপনাদের দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-সংঘাত হচ্ছে। দু-একটি জায়গায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। সংঘর্ষ-সংঘাত থামানো যাচ্ছে না কেন?
আসাদুজ্জামান খান: থামানো যাচ্ছে না—এ কথা ঠিক নয়। আমাদের দেশে নির্বাচন এলে সমর্থকেরা তাঁদের প্রিয় প্রার্থীকে জেতানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। তাতে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায়। কিছু এলাকায় প্রচারণায় সমর্থকদের উত্তেজনা থেকে কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে কোথাও পরিস্থিতি সীমা ছাড়িয়ে যায়নি এবং মাত্রাতিরিক্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কিন্তু যে ঘটনাগুলো ঘটছে, সেগুলো আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই ঘটছে। কারণ, বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-সংঘাতের ঘটনা ঘটছে এবং তা চলছে।
আসাদুজ্জামান খান: এটা আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিষয় নয়। নির্বাচন মানেই জেতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এই উপমহাদেশেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা হয়। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও নির্বাচনে সংঘর্ষ-সংঘাত হয়। আমাদের দেশে এবার নির্বাচনে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, প্রচারণায় তাঁদের সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা আছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সতর্ক রয়েছে।
মন্ত্রীদের কেউ কেউ নির্বাচনের বাইরে থাকা বিরোধী দলের প্রতি ইঙ্গিত করে একটা বক্তব্য দিচ্ছেন যে তারা গুপ্তহত্যার চক্রান্ত করছে। কিসের ভিত্তিতে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে?
আসাদুজ্জামান খান: এ ধরনের বক্তব্য তো আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়নি। তবে তারা (বিএনপি) এমন নাশকতা করতে পারে—এটা আমরা শুনছি, আমরা অনুমান করছি।
বিএনপির অভিযোগ, গত ২৮ অক্টোবর তাদের মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দলটির ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে?
আসাদুজ্জামান খান: বিএনপি গ্রেপ্তারের যে সংখ্যা বলছে, এই সংখ্যা ঠিক নয়। আমার জানামতে, এ পর্যন্ত হাজার দশেক গ্রেপ্তার হয়েছে। আর বিএনপির নেতা-কর্মী যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুরোনো অনেক মামলা রয়েছে। সেসব মামলাতেই তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। রাজনৈতিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে কোনো অভিযান চলছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রুটিন কাজ হিসেবে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ও মামলায় সারা দেশে প্রতিদিন হাজার দুয়েক গ্রেপ্তার হয়ে থাকে। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকে আবার জামিনে মুক্তি পেয়ে যান। ফলে হাজার হাজার গ্রেপ্তার, এ ধরনের কিছু নেই।
বিএনপিসহ সরকারবিরোধী আন্দোলনকারী দলগুলো নির্বাচন বর্জন করছে। বিএনপিবিহীন এই ভোটেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনা রয়েছে। কোনো না কোনো নির্বাচনী এলাকায় সংঘাত হচ্ছে। ভোটের দিনে বড় কোনো সংঘাতের কোনো আশঙ্কা কি আছে?
আসাদুজ্জামান খান: না, এ রকম কোনো তথ্য নেই। এরপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে, যাতে কোনো সংঘাত বা সহিংসতা না হয়। ভোট অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা মনে করছি।
আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
আসাদুজ্জামান খান: আপনাকেও ধন্যবাদ।