পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যের বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কেউ যদি বিদেশে গিয়ে কারও সঙ্গে গল্প করে আসেন, তার দায়-দায়িত্ব সরকার বা দলের নয়।
আজ রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, তাঁদের (আওয়ামী লীগ) ভিত জনগণ। জনগণের শক্তিতেই তাঁরা বিশ্বাস করেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর বক্তব্যটি বিকৃত করা হয়েছে।
সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ নন। সুতরাং, তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে বিদেশে গিয়ে দায়-দায়িত্বপ্রাপ্তও কেউ নন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে বলেন, তিনি ভারতে গিয়ে বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ‘যা যা করা দরকার’ তা-ই করার অনুরোধ করেছেন।
পরদিন শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমি বলেছি, আমরা চাই শেখ হাসিনার স্থিতিশীলতা থাকুক। এই ব্যাপারে আপনারা (ভারত) সাহায্য করলে আমরা খুব খুশি হব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যে দেশের রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকে বলেছেন, এটা দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে মোমেনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, মোমেনের মন্তব্য ভারতের জন্য ‘বিব্রতকর ও বিড়ম্বনার’।
একাধিক মন্ত্রীর নানা ধরনের বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি, দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকলে দায়িত্বশীলভাবে কথা বলা দরকার।’
সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ওই হামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র যুক্ত ছিল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের পরিচালনায় এ গ্রেনেড হামলা হয়েছে।
আজ সেই ২১ আগস্ট, নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ভয়াল দিন। ১৮ বছর আগে, ২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে অতর্কিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। মারা যান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ কয়েক শ নেতা-কর্মী।