‘ষড়যন্ত্রের বিষয়ে’ নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রায়ই বলি, ষড়যন্ত্র থেমে যায়নি। আপনারা নিশ্চয়ই গত কয়েক দিনের পত্র-পত্রিকার খবর থেকে বুঝতে পারছেন।...কোথাও কিছু একটা ষড়যন্ত্র চলছে। কাজেই জনগণকে সচেতন করতে হবে, জনগণকে পাশে রাখতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় দেওয়া বক্তৃতায় তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে এ কথা বলেন। রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি এই কর্মশালার আয়োজন করে।
লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে কর্মশালায় তারেক রহমান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সভ্য দেশে ভোটের মাধ্যমে জবাবদিহি তৈরি হয়। এই ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম ও খুন হয়েছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যেকোনো মূল্যে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
একটি দেশের রাজনীতি যদি রুগ্ণ হয়, সেই দেশের অর্থনীতি রুগ্ণ হতে বাধ্য বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি যদি রুগ্ণ হয়, তাহলে সেই দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার, প্রশাসন—সবকিছুই রুগ্ণ হয়ে যাবে। মানুষ কোনো সুফল পাবে না। কাজেই বিএনপির প্রথম কাজ হচ্ছে দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করা।
এ প্রসঙ্গে দেশকে একটি পরিবারের সঙ্গে তুলনা করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যার পর ছেলেমেয়েরা বাসায় ফিরতে দেরি করলে বাপ-মায়ের কাছে জবাব দিতে হয়। দেখুন, এই জবাবদিহি যদি না থাকত, তাহলে পরিবারের চিত্র কেমন হতো? গত ১৫ বছরে জবাবদিহি ছিল না বলেই এত গুম-খুন হয়েছে, নিশি রাতে ভোট হয়েছে, ডামি নির্বাচন হয়েছে। জবাবদিহি ছিল না বলেই দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে।’
তারেক রহমান বলেন, এ সবকিছু যদি ঠিক করতে হয়, অবশ্যই জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর এটি সম্ভব ভোট প্রয়োগের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আগামী দিনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে, আমরা যদি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারি; যদি জনগণের চাওয়া অনুযায়ী চলতে পারি; ইনশা আল্লাহ আগামী দিনে বিএনপি সরকার গঠন করবে। অর্থাৎ আগামী দিন পর্যন্ত একেবারে গ্রাম থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত জনগণের চাওয়ায় যদি চলতে পারি, তাহলে এটা সম্ভব।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, এখন অনেক অনেক সংস্কারের কথা বলছে। যখন কেউ এ বিষয়ে চিন্তাই করেনি, সেই সময়ে বিএনপি ২৭ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছিল। পরে এটা ৩১ দফা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশকে নিয়ে, দেশের মানুষের ভালো কিছু করার জন্য বিএনপির যে চিন্তা, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে এই ৩১ দফা।
এর আগে আজ সকালে এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। প্রথম দিনে ঢাকা বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।