রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলছে। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় সংঘর্ষ চলছিল।
আজ সকাল থেকেই নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে জমায়েত বড় হয়ে রাস্তার এক পাশ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
বিএনপির কার্যালয়ের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনায় রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের এ গুলিচালানো সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, সমাবেশের স্থান নিয়ে যখন আলোচনা চলছে তখন এই সংঘর্ষ শুরু হলো। আজ পল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভিড় করতে শুরু করে। একপর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সরে যেতে বারবার অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। একপর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে।
কে আগে হামলা করেছিল, এ প্রশ্নের জবাবে ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, আপনারা দেখেছেন। আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। তিনি জানান, এ সময় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা তিনি জানাতে পারেন নি।
১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনের সামনে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করতে চায় বিএনপি। এ জন্য তারা অনুমতিও চেয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বলা হয়েছে। এতে অবশ্য বিএনপি রাজি নয়। তারা সোহরাওয়ার্দীর একটি বিকল্প স্থান চায়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিকল্প কোনো জায়গা না দিলে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। এ বিষয়ে আজ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার যদি পছন্দ অনুযায়ী বিকল্প ভেন্যু না দেয় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ করবে বিএনপি।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশের কথা বলেছি। এখন বিকল্প প্রস্তাব দিতে হলে সরকারকে দিতে হবে। সরকারকে গ্রহণযোগ্য বিকল্প প্রস্তাব দিতে হবে।’
নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি পুলিশ না দিলে কী হবে, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পুলিশ পুলিশের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করব।’
এদিকে সমাবেশের আগে বিএনপির কয়েক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে পুলিশ। ৯ বছর আগের নাশকতার মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী আজ এ পরোয়ানা জারি করেন। এর আগে নাশকতার পুরোনো মামলায় গত সোমবার বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী ও ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার আদালত। মতিঝিল থানার নাশকতার মামলায় ইশরাকের বিরুদ্ধে আর পল্টন থানার নাশকতার মামলায় রিজভীর বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রলীগের সম্মেলনে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতা–কর্মীদের সজাগ থাকতে বলেন।