স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সভায় বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সভায় বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের

সরকার জাতীয় পার্টির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে: জি এম কাদের

সরকার জাতীয় পার্টির মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের এটা করা উচিত না। আমাদের মতো দল ধ্বংস হয়ে গেলে সরকারও সুখে থাকবে না।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি এই সভার আয়োজন করে।

সভায় জি এম কাদের বলেন, ‘নির্বাচন সঠিকভাবে হয়নি তা সংসদে বিস্তারিতভাবেই বলেছি। নির্বাচন ইস্যুতে খবরের কাগজে নিবন্ধও লিখেছি। সমস্যা হচ্ছে, আমাদের দলের কিছু লোক কথা বলে না। তাই দীর্ঘদিন ধরেই দল হিসেবে আমরা সংসদে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।’

দেশে কি ভোটাধিকার আছে—এমন প্রশ্ন রেখে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, কেন জিনিসপত্রের দাম কমছে না, কেন প্রতিদিন লাগা আগুন বন্ধ করতে পারছে না, কেন ভেজাল বন্ধ করতে পারছে না? কারণ হচ্ছে কোথাও জবাবদিহি নেই। গণতন্ত্রের বড় অবদান হচ্ছে আইনের চোখে সবাই সমান হবে। এখন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না। আইন করা আছে, সরকারের সমালোচনা করলেই আইনমাফিক মামলা হয়। বৈধভাবেই দাবিয়ে রাখার ব্যবস্থা করেছে সরকার।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাঙ্ক্ষিত সমাজ নির্মাণ হয়নি এবং দেশ সেদিকে যাচ্ছে না বলেও মনে করেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের। তিনি বলেন, মানুষকে নেতা নির্বাচনের অধিকার দিতে হবে। দেশ পরিচালনায় জবাবদিহি থাকতে হবে। ৫ টাকার পণ্য ৫ হাজার টাকায় কেনার মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে, রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ি চলছে। এগুলো দেখিয়ে বলা হচ্ছে, আমরা গরিব দেশ নই। অথচ বেশির ভাগ মানুষই অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষ জানে না, কাল তার বাড়িটি দখল হয়ে গেলে বিচারের জন্য কার কাছে যাবে।

বর্তমানে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, শুধু সরকার হিসেবেই আওয়ামী লীগ ঠিক আছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে চরিত্র হওয়ার কথা, তা থেকে তারা দূরে সরে গেছে। সামনের দিকে পাপেট (পুতুল) ছাড়া রাজনৈতিক দল থাকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

সবাই মিলে সহনশীল হলে যুক্তি দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব এবং দেশ ডুবিয়ে দিয়ে, কেউ বিদেশে গিয়ে সুখে থাকবেন—তা হবে না বলেও মন্তব্য করেন জি এম কাদের।

এই আলোচনা সভায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফখরুল ইমাম, মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আখতার, শেরীফা কাদের, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব সুলতান আহমেদ, জাতীয় যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ সোবহান, জাতীয় কৃষক পার্টির সাধারণ সম্পাদক এ বি এম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার প্রমুখ। আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু।