নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানি চলার সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আপিলকারী একজন প্রার্থীকে ‘পুলিশ দিয়ে’ বের করে দিতে বলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে নির্বাচন ভবনে শুনানির পর বের হয়ে এক প্রার্থী এমন অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী ওই ব্যক্তি হলেন টাঙ্গাইল–৬ আসনের আপিলকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী এ টি এম আনিছুর রহমান। আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাননি তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে রোববার প্রথম দিনের শুনানি হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাঁরা আপিল করেছেন, তাঁরা এই শুনানিতে অংশ নেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র বাতিল করায় আপিল করেছিলেন আনিছুর রহমানও। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের ‘ডামি ক্যান্ডিডেড’ হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান আনিছুর।
প্রথম দিনের শুনানিতে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ৪১ থেকে ৬০ নম্বর সিরিয়ালের আপিল শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তাঁর সিরিয়াল নম্বর ছিল ৪৪। তবে ১২টার আগেই তাঁর আপিল শুনানি হয়ে যায়। ফলে তিনি শুনানিকক্ষে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তারপর শুনানিকক্ষে প্রবেশ করেন জানিয়ে আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি বলেছি, আধা ঘণ্টা আগে শুনানি হয় কীভাবে? শুনানি এগিয়ে আনা হয়েছে, তা আমাকে জানায়নি কমিশন। কমিশন আমার সাথে অন্যায় করেছে। আপিল শুনানির জন্য এত তাড়াহুড়া কেন?’
শুনানির সময় তাঁর সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হয়েছে, তা তুলে ধরতে গিয়ে আনিছুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘তিনি (সিইসি) বলেন, পুলিশ দিয়ে বের করে দেন।
আমি বলেছি, কেন পুলিশ দিয়ে বের করে দেবেন? ভুল কি আমি করেছি? আমরা কি দেশকে আমলা ও পুলিশদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি? এটা অন্যায়। তিনি (সিইসি) বলেন যে, আপনি হাইকোর্টে যান। আমি বলেছি, হাইকোর্টে আমি যাব।’
আরও কী কথাবার্তা হয়েছে উল্লেখ করে আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি বলেছি, মিস্টার আউয়াল, আপনি আমার বিভাগের ছাত্র। আমিও ল বিভাগের ছাত্র।’ পুলিশের উদ্দেশে আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি বলেছি, সাবধান! আমি আগেই বের হয়ে যাব। ডোন্ট টাচ মি। তারপর আমি বের হয়ে এসেছি।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপিল শুনানি চলার সময় গণমাধ্যমকর্মীদের অবস্থান করার অনুমতি ছিল। তবে এবার শুনানিকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের অবস্থান করার অনুমতি ছিল না। ফলে শুনানিকক্ষে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে, তা গণমাধ্যমকর্মীদের পক্ষে শোনা সম্ভব হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোর্টের (আদালত) ডিসিপ্লিন (শৃঙ্খলা) নষ্ট করলে কোর্ট তো ডিসিশন দেবেই।’