দেশ এখন রাজনৈতিকভাবে একটা দুর্গতির দিকে যাচ্ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির উপদেষ্টা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। ‘বাংলাদেশের রাজনীতি কোন পথে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনার সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি (বিজিপি) কেন্দ্রীয় পরিষদ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো যে চাপ তৈরি করেছিল, তার কাছে শেখ হাসিনা সরকারের মাথা নত না করার বিষয়টির প্রশংসা করেন অধ্যাপক আবুল কাসেম। তিনি বলেন, জাতির মর্যাদা শেখ হাসিনা রক্ষা করেছেন। ওদের কাছে মাথা নত না করে শেখ হাসিনা নিজের বুদ্ধিতে চলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার বিবেচনা করা উচিত ছিল যে বিএনপি একটি বড় দল। তারা অনেক দিন ক্ষমতায় ছিল, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, এর মধ্যে নির্বাচন হবে, তাতে বড় গলদ থেকে যায়।
শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগেও দ্বিতীয় কোনো নেতা নেই বলে মনে করেন এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, নেতা বলতে যা বোঝায়, সে রকম কোনো নেতা কোনো দলের মধ্যেই নেই। শেখ হাসিনা যতকাল আছেন, ততকাল অন্য কোনো নেতার আত্মপ্রকাশের সময়, সুযোগ কোনোটাই নেই।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মধ্যে বংশানুক্রমিক রাজনীতি উল্লেখ করে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, নিজেদের মধ্যে কোনো আত্মসমালোচনা, দলের ভেতর কথা বলার কোনো অধিকার শেখ হাসিনার নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা রাখেন না। জাতীয় জীবনে গণতন্ত্রের যে রূপ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেখা যাচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের অধিকার, মর্যাদার উন্নতির সম্ভাবনা কম।
আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি—এরাই গত ৫৩ বছর দেশ শাসন করেছে এবং তারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি পুরোপুরি বাতিল করে দিয়ে একটা বংশানুক্রমিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে, যা রাজধানী থেকে উপজেলা—সব জায়গায় এ রকম গণতন্ত্রবিরোধী একটা ধারণা দিচ্ছে।
দলের রাজনৈতিক চরিত্র উন্নত হলে সরকারও উন্নত চরিত্রের হয়, যা দেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও মনে করেন আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, দেশের শিক্ষিত তরুণ ও ছাত্ররা মনে করে যে নতুন রাজনীতি, নতুন রাজনৈতিক দল ও নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্ব দরকার।
এই আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে দেশের রাজনীতি এক অস্বাভাবিক ও অসুস্থ ধারার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অথচ সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কোনো ক্ষেত্রেই এ দেশের রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্টজনের মধ্যে কোনো রকম ঐক্য দেখতে পাওয়া যায় না, যা দুর্ভাগ্যজনক।
গণমুক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য অমূল্য কুমার বৈদ্যের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন গণমুক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য এ বি এম ওসমান গনি প্রমুখ।