জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে কি না, সন্দিহান সরকার

জাতীয় পার্টি
জাতীয় পার্টি

জাতীয় পার্টি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারে বলে সন্দেহ সরকার ও শাসক দল আওয়ামী লীগের। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, জাতীয় পার্টিকে বিশ্বাস করা যায় না। সরকারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মন্ত্রী আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই দুই মন্ত্রী গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছিলেন।

দুই মন্ত্রী বলেছেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেশ কিছু পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই দুই মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিয়ে কয়েকজন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীদের বিষয়েও কথা বলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যেতে ব্যবস্থা নিতেও তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

মন্ত্রীদের অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে কী করবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। শেখ হাসিনা আরও বলেন, জাতীয় পার্টি রওশন এরশাদ, তাঁর ছেলে রাহগির আল মাহি এরশাদ (শাদ এরশাদ) ও মসিউর রহমানকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে রেখেছে। তারা কখন কী করবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর সবাইকে সেদিকেই যেতে হবে। নির্বাচন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। নির্বাচন হবেই।

সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় পার্টি কয়েক দফায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করেছে। ৭ জানুয়ারির ভোটে আসন ভাগাভাগি নিয়েই মূলত সেসব বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির সূত্র বলছে, তারা চায় তাদের চাহিদামতো ৩০ থেকে ৩৫টি আসন থেকে ‘আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের’ সরিয়ে নেওয়া হোক, যাতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা সহজে জিতে আসতে পারেন।

জাতীয় পার্টির এ চাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘সবাইকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।’

বৈঠকে উপস্থিত দুই মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীকে ‘দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বিরত রাখার অনুরোধ করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কিছু বলার নেই।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতার সঙ্গে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর বৈঠক হয়। সেখানেও ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীদের প্রত্যাহারের বিষয়টি ওঠে। তবে আওয়ামী লীগ এ বিষয়ে তাদের অবস্থান এখনো পরিষ্কার করেনি।