পাঁচ সিটি করপোরেশনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী মে ও জুন মাসে। পাঁচ সিটির মধ্যে গাজীপুর, সিলেট ও বরিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে নেতাদের বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গাজীপুর, সিলেট ও বরিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে নেতাদের বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলটির মনোনয়ন পেতে আজ রোববার গাজীপুর থেকে সাতজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। সিলেটের পাঁচজন এবং বরিশালের চারজন নেতা দলীয় ফরম নিয়েছেন। আর রাজশাহী থেকে গতকাল কেউ ফরম নেননি। এদিকে খুলনায় কেবল বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক দলীয় ফরম নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী মে ও জুন মাসে। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে আজ থেকে ফরম বিক্রি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে আগামী বুধবার পর্যন্ত।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গাজীপুরে যে সাতজন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান ওরফে কিরণ এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমান। আছেন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মেজবাহ উদ্দিন সরকার, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহম্মেদ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন।
তবে বিতর্কিত মন্তব্য করে গাজীপুর সিটির মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত জাহাঙ্গীর আলম ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান এখনো ফরম নেননি। গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এই দুজন আসলে দলের উচ্চপর্যায়ের সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন। কারণ, তাঁদের দুজনকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়নের শীর্ষ দাবিদার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রথম দিন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেননি। তবে তাঁর চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত ফরম নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের আরও তিনজন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা হলেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান। তবে দলের সূত্র বলছে, আবুল খায়ের আবদুল্লাহর পক্ষেই সাদিক আবদুল্লাহকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ আছে। কারণ, দুজনের একজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগনে। অন্যজন ভাগনের ছেলে। বাকি যাঁরা ফরম সংগ্রহ করেছেন, তাঁদের সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন দলের নেতারা।
সিলেটে কয়েক মাস ধরেই ৮-৯ জন প্রার্থীর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রথম দিন পাঁচজন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে দলের শীর্ষ পর্যায়ের পছন্দের প্রার্থী বিবেচনা করা হচ্ছে। এর বাইরে আজ যাঁরা ফরম সংগ্রহ করেছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, সিলেটে আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করবেন। তবে লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রবাসী বনাম স্থানীয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের আগ্রহী প্রার্থীরা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাইরে যে কাউকে মনোনয়ন দিলে সবাই একজোট হয়ে কাজ করবেন।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার খালেক আজ প্রথম দিনই ফরম সংগ্রহ করে অনেকটাই জল্পনার অবসান ঘটিয়েছেন। তবে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও খুলনায় আরও দু-একজন ফরম কিনবেন বলে দলের নেতারা মনে করছেন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনে বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের বাইরে অন্য কারও প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা কম। এ জন্য সেখান থেকে প্রার্থী হওয়ার তোড়জোড় নেই। খায়রুজ্জামান শেষ দিকে দলীয় ফরম সংগ্রহ করবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। খুলনাতেও একই অবস্থা। বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের বাইরে আর কারও প্রার্থীর হওয়ার আগ্রহের কথা শোনা যায় না।