দলীয় সিদ্ধান্তে বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করায় শূন্য ঘোষিত ছয়টি আসনে গতকাল বুধবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ এবং বগুড়া-৬ আসনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বগুড়া-৪ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রার্থী। আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলেও ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জিততে পারেননি ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী। এখানে জয়ের দেখা পেয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী।
ছয়টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্রের মোড়কে আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন পাওয়া বিএনপির দলছুট আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাঁর সমর্থনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলেন। এমনকি গতকাল নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাইকিং করার ঘটনাও ঘটেছে।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাসদের এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। কাহালু ও নন্দীগ্রামে মোট ১১২টি কেন্দ্রে বৈধ ভোট পড়েছে ৭৮ হাজার ৫২৪টি। এর মধ্যে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন রেজাউল করিম তানসেন (মশাল)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল হোসেন (একতারা) পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। এ আসনে ভোট পড়ার হার ২৩ দশমিক ৯২।
বগুড়া-৬ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৬৪ ভোট। এখানে ভোট পড়েছে ২২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনে ৯৪ হাজার ৯২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মু. জিয়াউর রহমান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মোহাম্মদ আলী (আপেল) পেয়েছেন ২৫ হাজার ৩৯৯ ভোট। এ আসনে ভোট পড়ার হার ৩৪ দশমিক ৭৮।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল ওদুদ এবং ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল হকের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। এ আসনে ওদুদ পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৯৩৮ ভোট। সামিউল পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৯৮০ ভোট। এ আসনে ভোট পড়ার হার ২৯ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে ১৩২টি কেন্দ্রের ফলাফলে ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (কলার ছড়ি প্রতীক) উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী (লাঙ্গল প্রতীক) আবদুল হামিদ ভাসানী পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৩৫ ভোট। এখানে ভোট পড়েছে ১৬ দশমিক ১০ শতাংশ।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল আংশিক) উপনির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ বিজয়ী হয়েছেন। তিনি লাঙ্গল প্রতীকে ৮৪ হাজার ৪৭ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী গোপাল চন্দ্র রায় একতারা প্রতীকে ৫০ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়েছেন। আর ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন আলী পেয়েছেন ১১ হাজার ৩৫৬ ভাট। তিনি জামানত হারাতে চলেছেন। এখানে ভোট পড়ার হার ৪৬ দশমিক ৩০।