বিরোধী দলের নেতা–কর্মীরা যাতে রাজনীতি করতে না পারে, সে জন্য তাঁদের সাজা দিয়ে দূরে রাখতে নতুন ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই বিরোধী নেতাদের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আজ রোববার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। ৮ মে রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে কোন কোন মামলায় বিচার হবে, বিনা শুনানিতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ সরকারের সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের সাজা দিয়ে কারান্তরিন করতে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়াকে বাস্তবায়িত করার জন্য বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে।’
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, ‘সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা, গায়েবি মামলায় এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
‘আমরা খবর পাচ্ছি নতুন ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হচ্ছে’ এই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিরোধী রাজনীতি করে এমন সবাইকে কারাগারে রাখার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর মূল লক্ষ্য হচ্ছে, দেশে রাজনীতিকে একেবারে নির্বাসনে দেওয়া। তারই শুধু রাজনীতি করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনীতিকে নির্বাসনে দেওয়ার তাদের (সরকার) চেষ্টা প্রতিটি নির্বাচনে দেখতে পাচ্ছি। তারাই প্রার্থী ঠিক করছে। ডামি প্রার্থীও তারাই ঠিক করছে। তথাকথিত বিরোধী দলের আসনও তারাই ঠিক করে দিচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছয় মাস পর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখলেন। সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন তিনি। গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা হয়। সেদিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে থাকার পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান তিনি। এরপর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর গতকাল ঢাকার নয়াপল্টনে যুবদলের সমাবেশে বক্তব্য দেন। আর আজ সংবাদ সম্মেলন করলেন মির্জা ফখরুল।