মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নিচর্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে তাঁকে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে সশরীরে এসে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
আজ রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, পাঁচ সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি প্রতিপালনের অনুরোধ জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও আওয়ামী লীগরে সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানাবে নির্বাচন কমিশন। আজ সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা বসে কারণ দর্শানো নোটিশ ও ইসির নির্দশনাসহ চিঠি পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, এসব এলাকায় আচরণবিধি না মানার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সূত্রে তথ্য এসেছে। ইসি থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও প্রার্থী ও তাঁদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ জন্য কমিশন আলোচনা করে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গাজীপুরের আওয়ামী লীগ প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের মধ্যে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘প্রার্থীকে ইসির পক্ষ থেকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে আজমত উল্লা সাহেবকে। তাঁর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে এবং কমিশনে এসে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য বলা হবে।’
নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো ধরনের মহড়া (শোডাউন) করা যাবে না। রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীর সঙ্গে পাঁচজনের বেশি লোক থাকতে পারবে না। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সেই নির্দেশনা মানেননি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা। মূল ফটক থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া পর্যন্ত সঙ্গে ছিলেন কমপক্ষে ১০ নেতা-কর্মী। পাশাপাশি সড়কেও ছিল নেতা-কর্মীদের মহড়া।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ২৭ এপ্রিল আজমত উল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আচরণবিধি ঠিক রেখেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আমার সঙ্গে পাঁচজনের বেশি লোক ছিলেন না। আজ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তাই সব কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা আসছেন। আমার পক্ষ থেকে কোনো শোডাউনও হয়নি।’
মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আচরণবিধির বিষয়ে গত বুধবার (২৬ এপ্রিল) একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তাতে বলা হয়, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো ধরনের মহড়া করা যাবে না বা পাঁচজনের অধিক নেতা–কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে না। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কোনো ব্যক্তি, কোনো রাজনৈতিক দল, কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ করলে নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ২৫ মে। গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে।