বিএনপিকে মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নীলনকশা তৈরি করেছে সরকার: স্থায়ী কমিটি

বিএনপি
বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটি বলেছে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার হত্যা, নির্যাতন শুরু করেছে। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নীলনকশা তৈরি করেছে। অন্যদিকে বিরোধী দলের প্রতি গণতান্ত্রিক আচরণের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে।

গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ সভায় এ অভিমত প্রকাশ করা হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সারা দেশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ সদস্যদের যৌথ হামলার নিন্দা জানানো হয়। এর পাশাপাশি দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রচার চালাতে ১৩২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণেরও নিন্দা জানান নেতারা।

সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর দেশের ৪৯২টি উপজেলায় একটি করে এলইডি ডিসপ্লে বসাতে চায়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩২ কোটি টাকা। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর প্রকল্প প্রস্তাবটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) উপস্থাপনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। জনগণের ১৩২ কোটি টাকার অর্থ অপচয়ের এলইডি প্রকল্প গ্রহণের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি বলেছে, শুধু দুর্নীতি ও নির্বাচনের পূর্বে ফায়দা নেওয়ার জন্য এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।

সভায় বিভিন্ন স্থানে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা, ভাঙচুর, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানের বেআইনিভাবে চায়নিজ রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণ করে যুবদল কর্মী শাওনকে হত্যা এবং নেতা-কর্মীদের আহত করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সভায় পুলিশের গুলিতে নিহত, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনায় মামলা করার জন্য কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে ‘লিগ্যাল সেল’ গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়।

এ ছাড়া বাংলাদেশের সীমান্তে এক সপ্তাহের মধ্যে আবারও মিয়ানমারের গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে স্থায়ী কমিটি। সভা মনে করে, পরপর এ ধরনের মর্টারের গোলা নিক্ষেপ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অনির্বাচিত সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশের সীমান্তে এসব ঘটনা ঘটছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণেই সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কোনো ইতবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।

সভায় এসব বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে সব হত্যাকাণ্ড, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন আরও বেগবান করার সিদ্ধান্ত হয়।