তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপিসহ কিছু “অপশক্তি” বাংলাদেশের বিষয়ে বিদেশিদের নাক গলানোর জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছিল। সেটির পরিপ্রেক্ষিতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সবার সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্কের কথা বলেছেন।’
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মিলনায়তনে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট ফর সাসটেইনেবল ফিন্যান্স’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী। বক্তব্য শেষে কাদেরের সাম্প্রতিক এক বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২৩’ উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন এ সেমিনারের আয়োজন করে।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর আমিনবাজারের এক সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘তলেতলে আপস হয়ে গেছে। আমেরিকার দিল্লিকে দরকার। দিল্লি আছে, আমরাও আছি। শেখ হাসিনা সবার সঙ্গে ভারসাম্য করে ফেলেছেন। আর কোনো চিন্তা নেই। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ কে পরিচালনা করবে, সেটি দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে। আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বিএনপি, তার মিত্ররা এবং কিছু দেশবিরোধী অপশক্তি দেশের বিষয়-আশয় শুধু বিদেশিদের কাছে উপস্থাপন করে এসেছে। আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের নাক গলানোর সুযোগ করে দিয়েছে এবং বিদেশিদের কাছে বারবার গিয়ে আমাদের দেশকে ছোট করেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ভারতে জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কীভাবে বিশ্বনেতাদের আলোচনা হয়েছে, শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সে দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এটিই প্রমাণ করে, আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
‘আমাদের সঙ্গে দিল্লি, ওয়াশিংটন, ব্রাসেলসসহ সবারই সুসম্পর্ক রয়েছে’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশের সঙ্গে কোনো কোনো দেশের সুসম্পর্ক যাতে বিনষ্ট হয়, সে জন্য অনেক অপচেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দেশে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণে ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন হবে।’
দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, বহুমাত্রিকতা এসেছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি দেশে মানি মার্কেট এবং ক্যাপিটাল মার্কেট যদি একসঙ্গে কাজ করে এবং মানি মার্কেট যদি ফড়িয়ামুক্ত হয়, তাহলে দেশের সমৃদ্ধি আরও বৃদ্ধি পাবে।’
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে দৃষ্টিপাত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের অর্থনীতির আকার গত প্রায় ১৫ বছরে কত গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটি অনেকের ধারণা নেই। আমাদের অতীতের ১০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এখন প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের বাজেট ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ৮৮ হাজার কোটি টাকা থেকে এখন ১২ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা হয়েছে। মাথাপিছু আয় ২০০৮ সালে ছিল ৬০০ ডলার, এখন ২ হাজার ৮৫৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে।’