উকিল সাত্তার ও শাহজাহান কামালের মৃত্যু

দুই আসনে উপনির্বাচন কি জরুরি

উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (বাঁয়ে) এবং এ কে এম শাহজাহান কামাল
ফাইল ছবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস চারেক আগে মৃত্যুবরণ করেছেন চলতি একাদশ সংসদের দুজন সদস্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) এবং আরেক আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে উপনির্বাচন করা জরুরি কি না, সে প্রশ্ন সামনে এসেছে।

উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং এ কে এম শাহজাহান কামাল—এই দুজন সংসদ সদস্য মারা যান গতকাল শনিবার ভোরে।

কোনো সংসদ সদস্যের মৃত্যু বা অন্য কোনো কারণে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে জাতীয় সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে উপনির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচন করা হয়। আসন শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এই উপনির্বাচন করতে হয়।

অন্যদিকে সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হয়। চলতি একাদশ সংসদ যাত্রা শুরু করেছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি এই সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হবে। তার আগের ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ১ নভেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে।

নির্বাচন কমিশন বলছে, আগামী নভেম্বরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে ভোট। ফলে এই দুটি আসনে উপনির্বাচন করা হলেও এখানে যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁরা সংসদ সদস্য হবেন খুব অল্প সময়ের জন্য। তাঁরা একাদশ সংসদের কোনো অধিবেশন না পাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। কারণ, অক্টোবরে সংসদের শেষ অধিবেশন বসবে। এরপর জাতীয় নির্বাচনের সময় শুরু হবে। সংবিধানে বলা আছে, সংসদের একটি অধিবেশন থেকে আরেকটি অধিবেশনের মধ্যে বিরতি ৬০ দিনের বেশি হবে না। তবে জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ৯০ দিনের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য নয়। সাধারণত এ সময়ে অধিবেশন আহ্বান করা হয় না।

এই দুটি আসনে উপনির্বাচন করা হবে কি না, তা এখন বলা যচ্ছে না। এই দুটি আসন শূন্য ঘোষণা করে জাতীয় সংসদ সচিবালয় নির্বাচন কমিশনে গেজেট পাঠাবে। সেটা কমিশনে তোলা হবে। তারপর কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
জাহাংগীর আলম, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব

তাই অল্প সময়ের জন্য এই দুটি আসনে উপনির্বাচন করা প্রয়োজন হবে কি না, সে প্রশ্ন সামনে এসেছে। অবশ্য নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, আইনে বলা আছে, সংসদের আসন শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ কোনো আসন শূন্য হওয়ার পরে যদি ৯০ দিন সময় থাকে তাহলে সেখানে নির্বাচন করতে হবে। এই সংসদের মেয়াদ আছে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত, সে হিসাবে সময় ৯০ দিনের বেশি আছে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, এই দুটি আসনে উপনির্বাচন করা হবে কি না, তা এখন বলা যচ্ছে না। এই দুটি আসন শূন্য ঘোষণা করে জাতীয় সংসদ সচিবালয় নির্বাচন কমিশনে গেজেট পাঠাবে। সেটা কমিশনে তোলা হবে। তারপর কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে গত ৩০ আগস্ট নাটোর–৪ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যু হয়। ওই আসনে উপনির্বাচন করেছিল নির্বাচন কমিশন।