হাইকোর্টে নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত

জাপায় জি এম কাদেরের দায়িত্বপালনে বাধা নেই

জি এম কাদের
ফাইল ছবি

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে জি এম কাদেরের নিষেধাজ্ঞার আদেশ আগামী ৩ জানুয়ারি ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। নিম্ন আদালত এই নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছিলেন।

নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে জি এম কাদেরের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। এর ফলে চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দায়িত্বপালনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।

গত ৪ অক্টোবর জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দলীয় কোনো প্রকার সিদ্ধান্তগ্রহন ও দায়িত্বপালন থেকে বিরত রাখতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

পরে এই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের আবেদন গত ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন তিনি। আপিলের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন রাখা হয়। এ অবস্থায় শুনানি এগোনোর জন্য আবেদন দেন জি এম কাদের। তাঁর আবেদন ২৪ নভেম্বর খারিজ হয়। এর বিরুদ্ধে গতকাল হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জিএম কাদের। এর ওপর আজ শুনানি হয়।

আদালতে জি এম কাদেরের পক্ষে আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাহিদা খাতুন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাবিনা পারভীন ও কোহিনুর আক্তার।

জিয়াউল হক ৪ অক্টোবর জি এম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে অবৈধ ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় দল থেকে জিয়াউল হকের বহিষ্কারাদেশকে বেআইনি ঘোষণা এবং দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০-এর উপধারা ১(১) অবৈধ ঘোষণার আবেদন জানানো হয়। মামলায় জি এম কাদের ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সচিব, জাপার মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম দপ্তর সম্পাদককে বিবাদী করা হয়। জিয়াউল হক জাপার সাবেক সংসদ সদস্য এবং দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। জি এম কাদেরের পক্ষে আদালতে বলা হয়েছে, জিয়াউল হককে আইন মেনে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মামলায় জিয়াউল হক দাবি করেন, জাপার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর ছয় মাস আগে তাঁর ছোট ভাই জি এম কাদের ভুল বুঝিয়ে ‘জাতীয় পার্টির জন্য ভবিষ্যৎ নির্দেশনা’ শিরোনামে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করান। এরপর জি এম কাদের প্রথমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, পরে চেয়ারম্যান হন, যা ছিল গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। এ নিয়ে দলের ভেতরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে এরশাদ ২০১৯ সালের ২২ মার্চ জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেন।

পরে ৪ মে পুনরায় জি এম কাদেরকে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়। তখন এরশাদ গুরুতর অসুস্থ থাকায় তিনি স্বাভাবিক বিবেচনা প্রয়োগে সক্ষম ছিলেন না বলে মামলায় দাবি করা হয়েছে। এরশাদের মৃত্যুর পর ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন জি এম কাদের। দলের গঠনতন্ত্রে এভাবে চেয়ারম্যান ঘোষণার কোনো বিধান নেই।