দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক না থাকায় উভয় দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সব ধরনের সংশয়-অবিশ্বাসের দেয়াল ভেঙে দিয়েছেন। সংশয় থাকলে এত উন্নয়ন হতো না।
আজ রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। বৈঠক শেষে দুজন আলাদাভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে সময় (২১ বছর) দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলে বাংলাদেশ-ভারত সীমন্ত ইস্যু, ছিটমহল সমস্যার আরও আগেই সমাধান হতে পারত। এখন আর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিসহ কিছু বিদেশি শক্তি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভন্ডুল করতে চেয়েছিল। তখন ভারত এসে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।
নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, কেউ শান্তিতে নেই। সরকারকে যারা উৎখাত করবে, অস্থিতিশীল করবে, তারা কি শান্তিতে আছে? আটলান্টিকের ওপারের দেশে কি শান্তি আছে? মধ্যপ্রাচ্য, রাশিয়া, ইউক্রেন—কোথাও শান্তি নেই। সারা পৃথিবী এখন রণক্ষেত্র। নিজের ঘর সামলানো কঠিন। বাইরের ব্যাপারে এত মাথা ঘামানোর সময় কারও নেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমারের উসকানিতে সরকার পা দেবে না। সরকার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায়। সরকার কোনো সংঘাতে যাবে না।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যেসব শ্রমিককে তিনি টাকা দেননি, যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত, যাঁরা বঞ্চিত, তাঁরাই মামলা করেছেন। এখানে সরকার মামলা করেনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। ডলার-সংকট, রিজার্ভ ও জ্বালানি–সংকটের সমাধান করা। এ ছাড়া প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
বিএনপির আন্দোলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি কোনো সহিংস আন্দোলনের কর্মসূচি দিলে সরকার তা কঠোরভাবে দমন করবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় পলাতক জীবন থেকে ফিরে এসেছেন। বিএনপি এযাবৎ যত স্বপ্ন দেখেছে, সব দুঃস্বপ্ন হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও সংযোগব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) ঋণের আওতায় যেসব প্রকল্প চলমান, সেগুলো শেষ করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন প্রকল্প নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।