সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, সে বিষয়ে এখনো নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এই নির্বাচন সামনে রেখে লন্ডন ঘুরে আসা এই বিএনপির নেতা বলেছেন, তাঁর একার হাতে কিছু নেই। স্থানীয় ভোটার ও সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আজ রোববার রাতে প্রথম আলোকে এ কথা বলেন আরিফুল হক চৌধুরী।
বিএনপির মনোনয়নে টানা দ্বিতীয় দফায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক। বর্তমানে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং সিলেট জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন। এ ছাড়া তিনি বিএনপির সিলেট মহানগরের সভাপতি ও জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে ইভিএমে ভোট হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দলীয়ভাবে আরিফুল হকের প্রার্থিতা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আরিফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, দলের সিদ্ধান্ত হচ্ছে নির্বাচনে যাবে না। দলের এ সিদ্ধান্ত তাঁকে মানতে হবে। আবার যাঁরা তাঁকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, সম্মান দিয়েছেন, তাঁদেরও মূল্যায়ন করতে হবে। এমন অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছেন, নির্বাচনে এজেন্ট ছিলেন, প্রচারণা করেছেন, আমার জন্য হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে। তাঁরা নির্বাচন করতে বললে দলের কাছে আপিল করতে হবে। আর দলীয় সিদ্ধান্ত জেনে তাঁরা যদি বলেন, ইভিএম দিয়ে করা নির্বাচনের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না, সেটিও মূল্যায়ন করতে হবে। আমার একার হাতে কিছু নেই।’
তাহলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কি না—এ প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক বলেন, ‘নির্বাচন করব, সেটিও বলছি না, করব না, সেটিও বলছি না। ঈদের পর এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। নির্বাচন করলে কেন করছি, সে ব্যাখ্যাও দেওয়া হবে, না করলে কেন করছি না, সে ব্যাখ্যাও থাকবে।’
এই নির্বাচনে প্রার্থিতা হওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে ২ এপ্রিল যুক্তরাজ্যে যান আরিফুল হক। সেখানে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তাঁর কাছ থেকে নির্বাচন নিয়ে ‘সিগন্যাল’ পেয়েছেন বলে গণমাধ্যমে জানান আরিফুল হক। তবে সেটি ইতিবাচক না নেতিবাচক, তা তিনি পরিষ্কার করেননি।
যুক্তরাজ্য থেকে ১৪ দিন পর আজ রোববার বেলা পৌনে তিনটার দিকে সিলেটে ফেরেন আরিফুল হক। সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রার্থিতা নিয়ে আরিফুল হকের অবস্থান জানতে গণমাধ্যমকর্মীরাও বিমানবন্দরে ভিড় করেন। কিন্তু খুব সংক্ষেপে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে আরিফুল হক বলেন, ‘অপেক্ষা করেন, সময়মতো জানাব।’