৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাক–র্মীরা মিছিল বের করলে আটকে দেয় পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে
৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাক–র্মীরা মিছিল বের করলে আটকে দেয় পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে

গণতন্ত্র মঞ্চের ‘ভোট বর্জনের’ মিছিল আটকে দিল পুলিশ

একতরফা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে রাজধানীতে মিছিল বের করেছিল গণতন্ত্র মঞ্চ। তাদের সেই মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে এ ঘটনা ঘটে।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বিকেল চারটার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে একতরফা ভোট বর্জনের গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করে গণতন্ত্র মঞ্চ। এর অংশ হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সেখানে বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষে বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা মিছিল শুরু করলে শাহবাগ মোড়েই আটকে দেয় পুলিশ।

পুলিশের বাধা দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন আজকের কর্মসূচির সভাপতি ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, তারা এই মিছিল নিয়ে শাহবাগ থেকে এলিফ্যান্ট রোড হয়ে সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে তা পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান সড়ক দিয়ে মিছিল গেলে ঝামেলা হতে পারে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি হচ্ছে। যাতে কোনো ঝামেলা না হয়, সে জন্য যেতে দেওয়া হয়নি।

‘সরকার পরাশক্তিগুলোকে হস্তক্ষেপের জায়গা করে দিচ্ছে’
মিছিলের আগে সমাবেশে বক্তব্য দেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা। সেখানে বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে দেশকে সংঘাত-সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং এর মধ্য দিয়ে দেশে পরাশক্তিগুলোকে হস্তক্ষেপের জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘এই সংঘাত-সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে কার্যত আপনারা বাংলাদেশে পরাশক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের জায়গা তৈরি করছেন। রাজনৈতিক সংকটের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংকট, তার সঙ্গে বিভিন্ন পরাশক্তির বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের যে সমীকরণ, এই সরকার তাদের সেই জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে।’

জনগণকে আসন্ন নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে সাইফুল হক বলেন, এখানে ভোট দেওয়ার অর্থ হচ্ছে ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দেওয়া।

বর্তমান সরকার নির্যাতন করে ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। দেশে রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, কূটনৈতিক সংকট তৈরি হবে। কেবল গদি রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগ গোটা দেশকে নিয়ে বাজি ধরছে।’ এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সরকার দেশকে ধারণ করে না বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনেরা জানে এই নির্বাচনের পরে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হবে, তাতে দেশ একটা দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়তে পারে। এটা জানার পরও সবকিছু উপেক্ষা করে তামাশার নির্বাচন করতে যাচ্ছে।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম। এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ ও নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ।