সরকার পতনের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল নাগরিক ঐক্য। এত দিন ধরে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না) রাজপথে সরব থেকে সরকারের সমালোচনা করে আসছিলেন। তবে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর থেকে তাঁকে আর রাজপথে দেখা যাচ্ছে না।
২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর বহু নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেকে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে গেছেন। বিরোধী দল ও জোটের নেতাদের নির্বাচনে টানতে সরকারি মহল থেকে নানা রকম তৎপরতা ও চাপ আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেকে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। এ রকম অবস্থায় মাহমুদুর রহমানকে কেন রাজপথে দেখা যাচ্ছে না, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঔৎসুক্য আছে।
বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দুই দফায় হরতাল এবং ছয় দফা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর প্রতিটি কর্মসূচিতেই রাজধানীতে মিছিল ও সমাবেশ নিয়ে মাঠে ছিলেন ও আছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা–কর্মীরা। এতে নাগরিক ঐক্যের নেতা–কর্মীরাও অংশ নিচ্ছেন। তা ছাড়া এই মঞ্চের কোনো কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা মিছিলে না থাকলেও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ কর্মসূচিতে থাকছেন। তবে এসব কর্মসূচিতে মাহমুদুর রহমানকে দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য সর্বশেষ হারতালের সময় একটি ভিডিও বার্তা দিতে দেখা গেছে তাঁকে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মাহমুদুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হয়। তবে তা বন্ধ পাওয়া যায়। ২০ নভেম্বর হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়, সেটি এখনো দেখেননি তিনি।
এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের নেতারা বলছেন, রাজপথে না থাকলেও গণতন্ত্র মঞ্চ ও নাগরিক ঐক্যের অভ্যন্তরীণ সব কার্যক্রমে মাহমুদুর রহমান সক্রিয় রয়েছেন।
২০১৫ সালে গ্রেপ্তার হয়ে দেড় বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন মাহমুদুর রহমান। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিরোধী নেতাদের ধরপাকড়ের মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এ অবস্থায় মাহমুদুর রহমানও এমন গ্রেপ্তার–আতঙ্কে আছেন বলে জানাচ্ছেন নাগরিক ঐক্যের নেতারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র বলছে, সরকার জোর করে নির্বাচনে নিতে পারে, সেই আতঙ্কেও আছেন মাহমুদুর রহমান।
আবার হরতাল–অবরোধ কর্মসূচিতে মিছিল–সমাবেশের যে ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে, তাতে শারীরিক অসুস্থতার কারণেও মাহমুদুর রহমানের পক্ষে থাকা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করছেন নাগরিক ঐক্যের নেতারা। দলটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রথম আলোকে বলেন, শারীরিকভাবে নানা অসুস্থতার মধ্যে আছেন তিনি। তাঁর চিকিৎসা চলছে। মূলত এ কারণেই তিনি আন্দোলন কর্মসূচিতে আসছেন না। তিনি সরকার পতনের আন্দোলনের সঙ্গে আছেন।