জেতার মতো না হলে শরিকদের আসন ছাড় নয়: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ফাইল ছবি

জোটের শরিক হলেই আসন ছাড় দেওয়া হবে—এমনটা ভাবছে না আওয়ামী লীগ। প্রার্থী জয়ী হতে পারবে কি না, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আজ বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ১৪–দলীয় জোটের শরিকদের আসন ছাড় দেওয়া নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।

শরিকদের আসনে এবার আওয়ামী লীগের বড় নেতাদের মনোনয়ন দিয়েছে। সমঝোতা হলে পুরোনো আসনগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে, নাকি নতুন আসনে ছাড় দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আসন বণ্টনের বিষয় আসলে পরস্পর সমঝোতার বিষয়। সবচেয়ে গুরুত্বের বিষয় হচ্ছে, আপনি নির্বাচনে জেতার মতো কি না? শরিক সে জন্য দেব? কিন্তু আপনাকে তো নির্বাচনে জিততে হবে। সেটা নাম্বার ওয়ান।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শরিক হলেই যে দিতে হবে? উনি নির্বাচনের জেতার অবস্থানে নেই, ওনার সেই রকম জনসমর্থন নেই। তাহলে শরিক এ জন্য দিয়ে হারব? সেটা তো হবে না। নির্বাচনে জিততে হবে।’

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য দলীয় স্বতন্ত্র (ডামি) প্রার্থী দেওয়ার জন্য বলেছে আওয়ামী লীগ। দলীয় ঘোষণার পর বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন না পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা স্বতন্ত্র নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলের লোক হলে সিদ্ধান্ত মানতে হবে। সে রকম ঢালাওভাবে কিছু করতে যাব না। আমাদেরও কিছু কৌশল আছে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে দলের মধ্যে শৃঙ্খলার সংকট দেখা দিতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবকিছু মাথায় রেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং নেব।’

বিএনপির আন্দোলনকে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হিসেবে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা কি আন্দোলন? এটা তো নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা। নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসার কথা। এসব যে চলছে, এ ব্যাপারে কারও কোনো কথা নেই, কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ অনেক বিষয়ে কথা বলে, কিন্তু এখানে নীরব কেন?’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে, বাংলাদেশের সুশাসনের কথা বলে, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বড় গলায় বলে, তারা আজকে একটা পক্ষের এসব অপকর্ম, মিথ্যাচার, গণতন্ত্রবিরোধী, সংবিধানবিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কেন নীরব? এটা নিয়ে তো কেউ কিছু বলছে না। নির্বাচনকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। যারা বাধা দিচ্ছে, তাদের ব্যাপারে তারা কেন নীরব? দেশে যারা সুশীল সমাজ, যারা মানবাধিকার, গণতন্ত্রের কথা বলে, তাদের কাছেও একই প্রশ্ন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা শুনেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে, এমন কোনো কর্মকাণ্ড হলে সেটা নির্বাচনবিরোধী কর্মকাণ্ড বলে বিবেচিত হওয়ার কথা। এখন তো সবাই নীরব। এখন কেউ কিছু বলে না। ইউরোপও কিছু বলে না, আমেরিকাও কিছু বলে না।’

বিদেশিদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাধা দেওয়ার ব্যাপারে দেশে–বিদেশে কত কথা শোনা গেল, এখন প্রকাশ্যে তারা বাধা দিচ্ছে, প্রকাশ্যে তারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। আমাদের দেশে যারা সুশীল সমাজ, মানবাধিকারের প্রবক্তা, যারা প্রতিনিয়ত সরকারের সমালোচনা করে।’

তফসিল পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংবিধানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা সময়সীমা আছে, সেই সময়সীমা অতিক্রম করে তফসিল পরিবর্তন আমরা কখনো সমর্থন করব না। সময়সীমাকে অতিক্রম করবে, এমন কোনো পদক্ষেপ, এমন কোনো পরিবর্তন আমরা কখনো সমর্থন করব না।’