বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, খিলগাঁওয়ে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না হলেও সমাবেশ করবেন। আজ অবশ্য জোড়পুকুর খেলার মাঠের পাশের সড়কে সমাবেশের অনুমতি মিলেছে। বেলা তিনটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পৌনে দুইটা থেকেই সমাবেশস্থলে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেছেন।
এদিকে বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে সমাবেশে অনেককে অংশ নিতে দেখা গেছে। যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁরা লাঠিতে বাংলাদেশের পতাকা টাঙিয়ে রেখেছেন।
খিলগাঁওয়ের যে এলাকায় আজ বিএনপি সমাবেশ করছে, এটি মির্জা আব্বাসের নির্বাচনী এলাকা। এ এলাকা থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে দলের তিন কর্মী নিহত ঘটনায় ১১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর ১৬টি স্থানে সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে আজ ১০ নম্বর স্থানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে পল্লবী, উত্তরা ও বনানীতে বিএনপির চলমান কর্মসূচিতে বাধা ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বিএনপির চলমান কর্মসূচিতে হামলা ও বাধা আসায় আজকের সমাবেশে অনেক নেতা-কর্মীকে লাঠি নিয়ে অংশ নিতে দেখা গেছে। এ কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো করার বিষয়ে আগেই দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নগর বিএনপির একটি সূত্র।
সরেজমিন দেখা যায়, বেলা পৌনে দুইটা থেকেই বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসছেন। বেলা তিনটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীদের সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে। এ সমাবেশে অনেকে বাঁশের লাঠি নিয়েও অংশ নিয়েছেন।
বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে সমাবেশে যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁরা লাঠিতে বাংলাদেশের পতাকা টাঙিয়ে রেখেছেন। এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁরা রাজি হননি।
তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে যুবদলের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা হচ্ছে। আমরা তো রাস্তা অবরোধ করছি না। গাড়ি ভাঙচুর করছি না। এরপরও আমাদের দলের সিনিয়র নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হচ্ছে। তাই আত্মরক্ষার জন্য লাঠি নিয়ে সমাবেশে এসেছি।’
সমাবেশে অংশ নেওয়া খিলগাঁও থানা বিএনপির এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, পল্লবীতে সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরি করার সময় বেলা সোয়া দুইটার দিকে হামলা হয়েছে। খিলগাঁও এলাকায় যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, তাই তাঁরা বেলা একটা থেকেই সমাবেশস্থলে আসা শুরু করেছেন। আগেই অবস্থা নিয়ে রেখেছেন। খিলগাঁওয়ের জোড়পুকুর খেলার মাঠসংলগ্ন যে এলাকায় বিএনপি সমাবেশ করছে, এটি ঢাকা দক্ষিণ সিটির এক নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী নির্দেশনা দিয়েছেন আজ বিএনপির সমাবেশস্থলের আশপাশে না যেতে। খিলগাঁও থানার এসি ও ওসি গতকাল আওয়ামী লীগ নেতাদের ডেকে বলেছেন, বিএনপি অনুষ্ঠানে কোনো বাধা দেওয়া যাবে না।
তাদের সমাবেশ করতে দিতে হবে। আশপাশের এলাকায়ও অবস্থান নেওয়া যাবে না। ডিএমপি কমিশনারের বরাত দিয়ে খিলগাঁও থানার কর্মকর্তারা বলেছেন, বিএনপিকে কর্মসূচি করতে দিতে হবে। কোনো ধরনের ঝামেলা করা যাবে না।
এদিকে সরেজমিন আরও দেখা যায়, সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।