আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম

মতিউরকে চিহ্নিত করেছে ছাগল, কোনো সংস্থা আগে তা পারেনি

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম বা রাজনীতিবিদেরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে চিহ্নিত করতে পারেননি। তাঁকে চিহ্নিত করেছে একটি বোবা প্রাণী, ছাগল। এমন মতিউর আরও আছে কি না, তা ছাগল বা অন্য কোনো বোবা প্রাণী চিহ্নিত করার আগেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার চিহ্নিত করা প্রয়োজন।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম।

সম্প্রতি এনবিআর কর্মকর্তা, সাবেক পুলিশপ্রধান ও সেনাপ্রধানের দুর্নীতির বিষয় সামনে আসে। গতকাল মঙ্গলবারও সংসদে সরকারি দলের দুজন সংসদ সদস্য সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে সতর্কভাবে প্রতিবেদন করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেয় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এ বিষয়ে ইঙ্গিত করে সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘যখন রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ আসে, তখন রাজনীতিবিদেরা পদক্ষেপ নেয় বা পক্ষ নেয় না। বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও আইনি বিচারে সোচ্চার হয়। এটাই হলো সৎ রাজনীতিবিদদের মহত্ত্ব। কিন্তু কখনো আমরা দেখতে পাই, যখন কোনো সরকারি বা বেসরকারি, আধা সরকারি সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে, তখন ওই গোষ্ঠী বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তৃতা, বিবৃতি প্রদান করে। প্রকারান্তরে বিশেষ ব্যক্তির ‍বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় কিন্তু ওই সংস্থাগুলো গ্রহণ করে। পুরো সংস্থার ওপর চলে আসে এ দায়। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো দলের বা সংস্থার হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিকে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।

ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, ঋণখেলাপি, অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট যারা করে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ছোটরা ধরা পড়লেও রাঘববোয়ালেরা ধরা পড়ে না। এখন সামনে এসেছে পুলিশের বড় কর্মকর্তা, এনবিআরের বড় কর্মকর্তা, তাঁরা দুর্নীতি করেন। কথায় আছে চোরের ১০ দিন, মালিকের ১ দিন।