গণফোরামের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে ড. কামাল হোসেনকে অব্যাহতির ঘোষণা দিয়েছে দলটির আরেক অংশ। কামাল হোসেন ও মিজানুর রহমান কর্তৃক ঘোষিত গণফোরামের নতুন কমিটিকে গঠনতন্ত্রপরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক বলেও এই অংশ দাবি করেছে। তারা বলছে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তারাই ‘আসল’ গণফোরাম।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়। ড. কামাল হোসেনকে দলের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতির পাশাপাশি মিজানুর রহমানকে দলের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি জগলুল হায়দার বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ড. কামাল হোসেন ও মো. মিজানুর রহমান ঘোষিত কমিটি সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্রপরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক।
জগলুল হায়দার বলেন, গণফোরামের অচলাবস্থা নিরসনে ও দেশব্যাপী একে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ড. কামাল হোসেনের অনুমতি ও সমর্থন নিয়ে অত্যন্ত সফলভাবে গণফোরামের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ওই অধিবেশনে এক হাজার কাউন্সিলরের সক্রিয় অংশগ্রহণে সর্বসম্মতিক্রমে গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি ও সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৭ সদস্যবিশিষ্ট গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয়।
জগলুল হায়দার অভিযোগ করেন, গণফোরামের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্কহীন, দল থেকে পদত্যাগকারী, বিভেদ সৃষ্টিকারী ও নিষ্ক্রিয় কিছু ব্যক্তি নিয়ে গণফোরাম নাম দিয়ে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি ও মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তাঁরা কেউই গণফোরামের নির্বাচিত কমিটি থেকে পদত্যাগ না করে স্বঘোষিত একটি গঠনতন্ত্রপরিপন্থী দল গঠন করেছেন।
জগলুল হায়দার বলেন, গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ড. কামাল হোসেনকে দলের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মিজানুর রহমানকে সভাপতি পরিষদের সদস্যপদসহ দলের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি নিয়ে আসেন। আমরা কিন্তু কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করেছি। কিন্তু উনি (ড. কামাল) প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা দিচ্ছেন, এটা আপনারা দেখেছেন। একটা আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দিতে পারতেন। কিন্তু প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে একটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা কীভাবে দিতে পারেন। যাদের সারা বাংলাদেশে কমিটি আছে।’
মোস্তফা মোহসীন বলেন, ‘আমরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করব। এখান থেকে সরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই এবং আমাদের পথও খোলা নেই। আমরা এর থেকে বিচ্যুত হব না। আমাদের সামনে যে ব্যক্তিই আসুন না কেন। তিনি যত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিই হোন না কেন, আমরা কিন্তু জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁদের সঙ্গে আপস করব না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ, মহিউদ্দিন আ কাদের, অধ্যাপক হাফিজ চৌধুরী, সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।