বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) প্রায় আট ঘণ্টা রাখার পর আবার কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত ৯ আগস্ট থেকে আড়াই মাস ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।
চিকিৎসক জাহিদ হোসেন আজ প্রথম আলোকে বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক কিছু জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাঁকে কেবিন থেকে আজ ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। এরপর তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা কিছুটা কমলে আট ঘণ্টা পর আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে আবার কেবিনে নেওয়া হয়েছে।
এবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এর আগে চার দফায় খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল।
৯ অক্টোবর বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, ‘খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে। খালেদা জিয়ার যে অবস্থা, তাতে তাঁকে বাসায় নেওয়া যাবে না। এখানকার চিকিৎসকেরা তাঁদের সাধ্য অনুযায়ী যা করার, করেছেন। এখন তাঁকে বিদেশে নিতেই হবে। এতে তাঁর জীবন রক্ষা পেতে পারে।’
বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ড অনেক দিন ধরে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তাঁর স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এ কারণে তাঁকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে এবং কখনো কখনো তাঁকে সিসিইউতে নিতে হচ্ছে। তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখছেন না চিকিৎসকেরা।
২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। কিন্তু সরকার সে আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্রোগে ভুগছেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এর পর থেকে ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।