জেল হত্যা দিবসে মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (পুরাতন) মূল ফটকের সামনে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী সামান্য সময়ের জন্য মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করেন। তবে ভোরে বনানী কবরস্থানে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেননি তাঁরা। পুলিশের উপস্থিতির কারণে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েও ফিরে আসেন তাঁরা।
শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচিতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আনোয়ার হোছাইন, ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক এনামুল হক (প্রিন্স), সাবেক উপমানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক কপিল হালদার, সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এম এম নাজমুল হাসান, সাবেক সহসভাপতি হাসান আহম্মেদ খান, যুবনেতা জহির তালুকদার প্রমুখ।
৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা হত্যাসহ নানা মামলায় কারাগারে নতুবা আত্মগোপনে আছেন। এরপর আওয়ামী লীগ কিংবা দলটির সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি নেই। দলটির ফেসবুক পেজে নানা বক্তব্য-বিবৃতি তুলে ধরা হচ্ছে। দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথা বলার অডিও বা ভিডিও কলের রেকর্ড ফাঁসও হয়েছে কিছু। তবে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের কয়েকজন এভাবে গভীর রাতে ও ভোরে কিছু ঝটিকা মিছিল করেছেন।
মোমবাতি প্রজ্বালনে অংশ নেওয়া মুহাম্মদ আনোয়ার হোছাইন বলেন, বর্তমান সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার বা নেতিবাচকভাবে জাতির সামনে হাজির করছে। তারই ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অস্বীকার করছে। বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর জাতীয় চার নেতার মৃত্যুবার্ষিকী পালনে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে বর্তমান সরকার এসব নেতাকেও অস্বীকার করছে।
রাতের আঁধারে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী অবস্থায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে। আওয়ামী লীগ দিবসটিতে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে।