ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ–সমাবেশ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা–কর্মীরা
ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ–সমাবেশ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা–কর্মীরা

সিপিবির বিক্ষোভ

ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী

রেলে দুর্নীতি, অপচয় ও অব্যবস্থাপনা বন্ধ করে লাভজনক করার পরিবর্তে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী বলেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। তাই ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে দলটি। ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সিপিবি।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন প্রাঙ্গণে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানান সিপিবির নেতারা। সমাবেশ শেষে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন চত্বর প্রদক্ষিণ করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এরপর গণপরিবহন ট্রেনের টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে। পণ্যের পরিবহন ব্যয় বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের ওপর বর্তাবে।

সমাবেশে সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, বড় বড় প্রকল্পের নামে রেলকে আধুনিকায়ন করার কথা বলা হচ্ছে, অথচ এই টাকার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম্যের কুফল ভোগ করছে মানুষ। অথচ সরকার তাঁদেরই পোষণ করে চলছে।

সরকার শুধু সিন্ডিকেটের পাহারাদারই নয়, সিন্ডিকেটের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবি সভাপতি। তিনি বলেন, রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) বলেন, দুর্নীতি, অপচয় ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলে রেলকে আরও লাভজনক খাতে পরিণত করা যেত। এটি না করে রেলের ভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে দুর্নীতিবাজদেরই দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নেই। এই প্রকল্পগুলোর শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।

রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে রুহিন হোসেন বলেন, পরিকল্পিতভাবে নৌ খাতকে ধ্বংস করা হয়েছে। রেলপথে খরচ বৃদ্ধি ও সংকুচিত করে রোড সিন্ডিকেট ও বাসমালিকদের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রেলের ভাড়া বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। রেলে পদ খালি থাকলেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। বেসরকারি খাতে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের শত শত কোটি টাকা মুনাফা ও লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার, কাজী রুহুল আমিন প্রমুখ।