একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে সংবিধান অনুসারে এবং এই নির্বাচন কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, সংসদ বিলুপ্ত বা সরকারের পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না।
আজ শনিবার সম্প্রীতি নৌযাত্রা-২০১৮ উদ্বোধনী পর্বে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন। সদরঘাটে এমভি মধুমতি জাহাজে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আজকে ড. কামাল হোসেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও বিএনপি এক হয়ে একটি ঐক্যজোট গঠন করতে যাচ্ছে। আমরা এই ঐক্যজোটের বিরুদ্ধে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুসারে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখ অনুসারে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় থাকবে। ভারতে ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় থাকে নির্বাচনকালে। অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, গ্রেট ব্রিটেন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র—প্রতিটি দেশে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করে। ভারতে সংসদও থাকে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন হবে সংবিধান অনুসারে। দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, এই নির্বাচনকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। সরকারের যে দায়িত্ব নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করা, সেই নির্বাচন কমিশনই নির্বাচন পরিচালনা করবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করব। এর বাইরে কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা সবাইকে চিনি, আমরা দলছুট নেতাদেরও চিনি। যাঁরা আজকে জোট করছেন, তাঁরা একসময় আমাদের দল করতেন। এমন নেতাও আছেন জীবনে ভোটে দাঁড়িয়ে জিততে পারেন নাই, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এমন নেতাও আছেন, যাঁকে রাষ্ট্রপতি করা হয়েছিল, টেনে নামানো হয়েছে।’
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী ও বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে ইউনাইটেড রিলিজিয়ন ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের বিদ্যাসাগর সোসাইটি ও ইন্টাররিলিজিয়ন হারমোনি সোসাইটির উদ্যোগে সম্প্রীতি নৌযাত্রা-২০১৮ আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী পর্বে ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন: আন্তধর্মীয় সম্প্রীতির মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি—এটি ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূলনীতি এবং সেই নীতি অনুসরণ করেই আজ আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করে চলেছি।’
উদ্বোধনী পর্বে ইন্ডিয়া ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর বিশ্বদেব চক্রবর্তী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অবদান শুধু বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বাঙালি চেতনার যে নবজাগরণ উনি শুরু করেছিলেন, তা শুধু বাংলাদেশকে কেন্দ্র করেই এখন তা প্রভাবিত নয়, সারা বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে।’
ইন্টার রিলিজিয়ন হারমনি সোসাইটির মহাসচিব মনোরঞ্জন ঘোষালের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে ইউনাইটেড রিলিজিয়ন ইনিশিয়েটিভের এশিয়ান ট্রাস্টি রেভা. কল্যাণ কুমার কিস্কু, ইন্টার রিলিজিয়ন হারমনি সোসাইটির চেয়ারম্যান মিঞা মুজিবুর রহমান, বিদ্যাসাগর সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল হাই প্রমুখ বক্তব্য দেন।