নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘সরকার দেশের মানুষের কোনো কিছুই দিতে পারে না। দেশের মানুষ ফুঁসে আছে। এমন অপ্রিয় সরকার দেশে গত ৫০ বছরেও আসেনি।’
রাজধানীর তোপখানা সড়কের বিএমএ মিলনায়তনে শুক্রবার বিকেলে ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মান্নায় এসব কথা বলেন। ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলন এই সভার আয়োজন করে।
সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সংগ্রাম, লড়াই হবেই। গণফোরাম বা বিএনপির একজন বা দুজন সংসদে যোগ দিলেই এই সংসদ বৈধ হবে না। এই সংসদ অবৈধ, ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ডাকাতির ভোট। যারা ক্ষমতায় আছে, তারা জবরদখলকারী। এরা যতই চেষ্টা করুক, কয়লা ধুলে যেমন ময়লা যায় না। এরা নিজেদের অপকর্ম কখনোই ঢাকতে পারবে না। এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর লড়াই হবেই।’
রাজনীতিবিদদের নিয়ে দেশের মানুষের ধারণা ‘খারাপ’ বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, ষাটের দশকে দেশের রাজনীতিবিদদের সম্মানজনক অবস্থান ছিল, এখন তা নেই। কারণ, ভোটাধিকার হরণ করে, গুম, খুন, ধর্ষণসহ নানাভাবে মানুষের অধিকার নষ্ট করে রাজনীতিবিদেরা তাঁদের অবস্থান হারিয়েছেন।
রেজা কিবরিয়া বলেন, এই দেশে ভোটের রাজনীতি নেই। গত ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর কী ঘটেছে, জনগণ জানে। এককালে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের ও জনগণের অধিকারের দল ছিল, সেখান থেকে তারা অনেক সরে এসেছে।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারে কাছে নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, যারা ক্ষমতায় আছে, তারা কত খারাপ তা আলোচনা করতে গেলে মহাকাব্য হয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হারিয়ে গেছে। মানুষ এখন বোঝে, আওয়ামী লীগ কতটা খারাপ। এর জন্য দেশে মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বর্তমানে দেশে স্বৈরশাসন চলছে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের সভাপতি জোনায়েদ সাকি। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, জনগণ এই সরকারের ওপর তেতে আছে। রাস্তায় বেরিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বললেই তা বোঝা যায়। মানুষ এই বাস্তবতা মেনে নিতে পারছে না, তারপরও প্রধানমন্ত্রী বলেন, কই, মানুষ তো রাস্তায় নামেনি। তিনি বলেন, এই স্বৈরশাসনই দেশে একটি ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক ভিত্তি নির্মাণ করে যাচ্ছে। একে পরিবর্তন করতে না পারলে, ন্যূনতম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে, দেশকে সাম্প্রদায়িক অধঃপতন থেকে রক্ষা সম্ভব নয়।
সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আহমেদ কামাল, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাইফুল হক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল্লাহ আল ক্বাফী, ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান প্রমুখ।