হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হচ্ছে

হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসা থেকে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় র‌্যাব।
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হবে। পাঁচটি ভিন্ন আইনে এই মামলাগুলো করা হবে। তাঁরা মালিকানাধীন আইপি টেলিভিশন চ্যানেল জয়যাত্রার কোনো অনুমোদন ছিল না। ওই কার্যালয় সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর কুর্মিটোলায় আজ শুক্রবার র‌্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন ও টেলিযোগাযোগ আইনে পৃথক পাঁচটি মামলা করা হবে।

আল মঈন জানান, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই আইপি টিভি চ্যানেল পরিচালনা করছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। তিনি জেলায় জেলায় প্রতিনিধি নিয়োগের নামে চাঁদাবাজি করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরে অবস্থিত ওই টেলিভিশন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। আর টিভির সম্প্রচার-সরঞ্জাম জব্দ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। প্রায় সোয়া চার ঘণ্টার অভিযানে ওই বাসা থেকে বিদেশি মদ, বিদেশি মুদ্রা, হরিণ ও ক্যাঙারুর চামড়া, ক্যাসিনোর সরঞ্জাম ও ওয়াকিটকি সেট উদ্ধার করা হয়। রাত সোয়া ১২টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র‌্যাবের সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।

এরপর দিবাগত রাত দুইটার দিকে র‌্যাবের একটি দল মিরপুরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশন ও জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন ভবনে অভিযান চালায়। রাতভর ওই অভিযান চলে। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল এ এম আজাদ জানান, অভিযানের সময় টিভি চ্যানেলটির অনুমোদন থাকার কোনো কাগজপত্র তাঁরা পাননি।

আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। গত ১৭ জানুয়ারি তাঁকে এই পদ দেওয়া হয়। গত রোববার তাঁকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উপকমিটির সদস্যসচিব ও আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ সই করেন। এতে বলা হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তাঁর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতিবহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ হতে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের দিকে তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। আবদুল মতিন খসরু মারা গেলে ওই আসনে মনোনয়নের জন্য দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তবে মনোনয়ন পাননি।

সম্প্রতি ফেসবুকে নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ছবি পোস্ট করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।

বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। কথিত এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীর ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করা হয়।