মেয়েদের স্কুলে না পাঠানো নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর বক্তব্য সম্পূর্ণ তাঁর নিজস্ব বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
চট্টগ্রামে নিজ বাসায় আজ শনিবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় নওফেল বলেন, ‘যিনি এই মন্তব্যটা করেছেন, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের শিক্ষানীতি প্রণয়ন বা শিক্ষা, পরিচালনা বা শিক্ষা খাতে কোনো নির্বাহী দায়িত্বে নেই। যেহেতু যেকোনো নাগরিকেরই বাক্স্বাধীনতা আছে, তার মনের ভাবনা প্রকাশ করার অধিকার আছে। তিনিও দেশের নাগরিক হিসেবে তাঁর নিজের একটা বিশ্লেষণ দিয়েছেন। সেটা আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমি সম্মানের সঙ্গে বলব, আমরা সকলেই যারা বাক্স্বাধীনতার চর্চা করছি, আমরা যেন এই বিষয়টা মাথায় রাখি যে সংবিধান অনুসারে আমাদের সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।’
উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেন বৈষম্যমূলক মন্তব্য না করি, এটা আমি সকলের কাছে আহ্বান জানাব। যেহেতু তিনি কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অবস্থানে নেই, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত দিয়েছেন। কিন্তু তিনি অভিমত দিলেই সেটা রাষ্ট্রীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত বা প্রতিফলিত হবে, সেটা চিন্তা করার অবকাশ নেই। সমাজে এ রকম অনেকেই অনেক ধরনের অভিমত দেন।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নওফেল বলেন, ‘সমালোচনাটা তো আমরা নিজেরাই এনেছিলাম যে পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণ বা বিভাজন সৃষ্টি করা, কোমলমতিদের মানসিকতায় যদি আমরা এটা দিয়ে দিই, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে গিয়ে সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস করে।’
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠন করতে আমাদের বাধ্য করেছে। আমরা অবশ্যই ইসলামের অনুশাসন মেনে চলব, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাঁদের অনুশাসন মেনে চলবেন। অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ কারিকুলাম অত্যন্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার মানোন্নয়নও খুবই প্রয়োজন। এতে সামাজিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে না। পড়াশোনা যদি সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যৎ নয়, নিকট ভবিষ্যতেও আমাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে পড়বে।’
গত শুক্রবার আহমদ শফী মেয়েদের স্কুল–কলেজে না পাঠানোর জন্য ওয়াদা দিয়েছেন।