নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার ডাকা অর্ধদিবস হরতাল সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাম জোট। সেই সঙ্গে তারা এ হরতালে কোনো উসকানি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বাম জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান। আজ রোববার সকালে পুরানা পল্টনের মৈত্রী মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সাইফুল হক বলেন, ‘ভোজ্যতেল-চাল-ডাল-পেঁয়াজসহ খাদ্যদ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির মূল্যবৃদ্ধির তৎপরতা বন্ধে গত ১১ মার্চ বাম জোট হরতাল ডাকে। ইতিমধ্যে আমরা কয়েক লক্ষ প্রচারপত্র বিলি করেছি, হরতালের পক্ষে পোষ্টার লাগানো হয়েছে। হরতালের আহ্বান দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে ঢাকাসহ সারাদেশে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যাপক সভা, সমাবেশ, প্রচার মিছিল ও গণসংযোগ অব্যাহত রয়েছে।’
'বাধা প্রদান করবে না বা সহিংসতা সৃষ্টির কোনো প্রচেষ্টা চালাবে না। এই ধরনের যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনার দায়দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলকেই বহন করতে হবে।’সাইফুল হক, আহ্বায়ক, বাম জোট
সাইফুল হক বলেন, গণদাবির এই হরতালের পক্ষে আদেশের মানুষের ব্যাপক সমর্থন ও সাড়া দেখা গেছে। দলমত নির্বিশেষে দেশর মানুষকে রক্ষা করার এই হরতালের প্রতি মানুষের মধ্যে একধরনের স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ করা গেছে।
বাম নেতা সাইফুল হক বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতালের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ প্রচার মিছিল, গণসংযোগ ও প্রচার কার্যক্রমে সরকারি দল ও ছাত্রলীগ হামলা করেছে। অনেক জায়গায় পুলিশ কোনো উসকানি ছাড়াই প্রচার মিছিলে বাধা দিয়েছে। এসব হামলা-আক্রমনে জোটের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসব সন্ত্রাসী হামলা-আক্রমনের পুরো দায়দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলের।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই যে, গণদাবির এই হরতাল গণমানুষের সমর্থনে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা পালন করতে চাই। আমরা আশা করি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকার ও সরকারি দল এই হরতাল কর্মসূচিতে কোনো প্রকার উসকানি সৃষ্টি করবে না। বাধা প্রদান করবে না বা সহিংসতা সৃষ্টির কোনো প্রচেষ্টা চালাবে না। এই ধরনের যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনার দায়দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলকেই বহন করতে হবে।’
সাইফুল হক জানান, ২৮ মার্চ ভোর ৬টা থেকে বাম জোটের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা পুরানা পল্টনসহ ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেবেন এবং হরতালের পিকেটিং এ যোগ দেবেন। জনগণের ব্যাপক সমর্থনে এই হরতাল সফল হবে। হরতাল সফল করতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দোকান মালিক, কর্মচারী, পরিবহন মালিক, পরিবহন শ্রমিকসহ সব স্তরের ও শ্রেণিপেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার, বাসদ-মার্কসবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আবদুল আলী, ওয়ার্কার্স পার্টি-মার্কসবাদীর বিধান দাস। আরও উপস্থিত ছিলেন জোটের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, বহ্নিশিখা জামালী, মোশাররফ হোসেন নান্নু, মানস নন্দি, শহীদুল ইসলাম।