দলের নেতা-কর্মীদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিএনপি নিঃশেষ হয়ে যায়নি। বিএনপি প্রতিটি সংকটের মুহূর্তে উঠে দাঁড়িয়েছে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘হতাশ হবেন না, হতাশার কথাও বলবেন না।’
আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে শত নাগরিক আয়োজিত 'খালেদা জিয়া তৃতীয় বিশ্বের কণ্ঠস্বর’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের ওপর এই গবেষণা গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ ও কবি আবদুল হাই শিকদার।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপিকে ভেঙে ফেলার জন্য বারবার চেষ্টা হয়েছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বারবার চেষ্টা হয়েছে। এবারও খালেদা জিয়া কারাগারে একটি কারণে, সেটা হলো বিএনপিকে নিঃশেষ করা। বিএনপিকে ধ্বংস করে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া। কিন্তু সম্ভব হবে না, হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, হতাশ হবেন না, হতাশার কথা বলবেনও না। খালেদা জিয়া যেখানেই থাকুন, তিনিই অনুপ্রেরণা বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে অস্বাভাবিক অবস্থা চলছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। আর গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
বিএনপি থেকে নির্বাচিত ছয়জনের সংসদে যাওয়ার প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের সংসদে যাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেউ শপথ নেবেন না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি ঠাট্টা ও মশকরা ছাড়া আর কিছু নয়। আর এ ধরনের অসংগতি প্রস্তাব সরকারের কাছ থেকে আসতে পারে না এবং আসবে না। বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের সংসদে যাওয়ার ইচ্ছার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিএনপির নির্বাচিতরা বলছেন, জনগণের ইচ্ছা। সুতরাং দল বললে তাঁরা প্রস্তুত এবং তাদের কাপড়-চোপড়ও প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, তাঁরা বলবেন দল বললে আমরা যাব, অন্যথায় যাব না। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে আমরা সংসদে যাব, অন্যথায় যাব না। এই কথাগুলো শুনতে চেয়েছিলাম। তবে এরপরও যদি দল মনে করে সংসদে যাব না, তাহলে আমরা সংসদে যাব না। ’
সূচনা বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, এই বইটি বিক্রির টাকা দিয়ে একটি ফাউন্ডেশন তৈরি করা হবে।
প্রকাশনায় শত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।