শুক্রবার দিবাগত রাতে উৎক্ষেপণ হওয়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ওটা আগে ঘুরুক, পৃথিবী পরিক্রম করুক। তারপর দেখা যাবে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা-নিঃশর্ত মুক্তি এবং চিকিৎসক শামীউল আলমের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতিবাদ সভাটির আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানে অতিথিদের উদ্দেশে বলেন, ‘যা–ই হোক এটারও (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট) মালিকানা চলে গেছে জানেন তো? স্যাটেলাইটের মালিকানাও চলে গেছে দুজন লোকের হাতে এবং সেখান থেকে আপনাকেও কিনে নিতে হবে। চুক্তি হচ্ছে অনেক। এই চুক্তি করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? যে চুক্তিই করেন না কেন আপনি, সেই চুক্তি তো জনগণের চুক্তি নয়। আমি এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু বলব না। কারণ এ বিষয়টি ভালো করে দেখিনি। আগে দেখি চুক্তিগুলো কী হয়েছে?’
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আলোচনা করুন, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন, তাঁর সঙ্গে কথা বলুন এবং নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘জনগণ এই দেশের মালিক। সেই মালিকদের যে চাহিদা, আশা–আকাঙ্ক্ষা, তা পূরণ করার ব্যবস্থা করুন। না হলে এই দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’ তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় গুন্ডাদের ঠেকানোর জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করুন, যেন মানুষ নির্ভয়ে–নিরাপদে ভোট দিতে যেতে পারে এবং সঠিক রায়টা পাওয়া যায়। এই ব্যবস্থাগুলো করলে অবশ্যই এই দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে, মানুষ স্বস্তি ফিরে পাবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় ঐক্য ছাড়া কোনো উপায় নেই। গোটা দেশের মানুষকে এক করতে হবে। এক করে এই ভয়াবহ দানবকে সরাতে কাজ করতে হবে। অবশ্যই অন্যান্য রাজনৈতিক দল, ধর্ম, বর্ণ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই দানবকে সরাতে হবে। মালয়েশিয়াতেও দেখা গেল এই ধরনের ঐক্য না হলে এটা খুব কঠিন। সে জন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে এদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে।
মালয়েশিয়ার প্রসঙ্গ এনে ফখরুল ইসলাম বলেন, মাহাথির মোহাম্মদ নির্বাচিত হয়ে দুটি কথা বলেছেন, এক তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করবেন না। দুই তিনি আনোয়ার ইব্রাহীমকে অতি দ্রুত মুক্তি দিয়ে তাঁকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেবেন। তিনি আরও বলেন, ‘তাঁকে (আনোয়ার ইব্রাহীম) যে সাজা দিয়েছিলাম, আমি ভুল করেছি। ১১ বছর সাজা দিয়েছিলেন, এখনো জেলে আছেন। আজকে সেখান থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।’
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় এবং বিএসএমএমইউর সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরউল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল কুদ্দুস, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।