বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ন্যায়বিচার পাননি বলে মনে করে বিএনপি। দলটির দাবি, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের জন্য সাকা চৌধুরীর ‘কমিটমেন্ট’ ছিল। তাঁর স্বপক্ষে যেসব দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেগুলো বিবেচনায় নিলে তিনি হয়তো ন্যায় বিচার পেতেন।
আজ বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন দলটির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।
রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে সাকা চৌধুরী ‘পরসিকিউশনের’ শিকার হয়েছেন দাবি করে রিপন বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর এলাকার মানুষ তাঁকে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে পাঠিয়েছিলেন। তিনি, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের জন্য তাঁর কমিটমেন্ট ছিল। তিনি একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক ছিলেন, সৎ রাজনীতিক ছিলেন, তাঁর কমিটমেন্ট ছিল, গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি আপোষহীন ছিলেন।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সময় জানাতে মূলত ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আপিল বিভাগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের পর বিএনপির যে অবস্থান ছিল, এখনো বিএনপির একই অবস্থান বহাল রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম তিনি ন্যায়বিচার পাবেন, কিন্তু আইনজীবীরা বলেছেন, তিনি ন্যায় বিচার পাননি।’
রিপন দাবি করেন, সাকা চৌধুরী অপরাধী নন। তিনি অপরাধ করেননি। যে সময়ে অপরাধ সংগঠনের কথা বলা হয়েছে, সেসময় তিনি দেশে ছিলেন না। সাকা চৌধুরীর পক্ষ থেকে এর দালিলিক প্রমাণ এবং দেশি-বিদেশি একাধিক বিশিষ্ট জনকে সাক্ষী মানা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, তিনি ওই সময় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন।
রিপন বলেন, ‘আমরা খুশী হতাম, দেশবাসী খুশী হতো যদি এসব বিবেচনায় নেওয়া হতো। তাহলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওই সময় দেশে ছিলেন না, এবং দেশে না থাকায় তাঁর পক্ষে সে জাতীয় অপরাধ করার সুযোগ ছিল না—তা প্রমাণ হতে পারতো।’
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশে না থাকা নিয়ে সাকা চৌধুরী আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি তা বিশ্বাস করে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, তিনি আমাদের পার্টির নেতা। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন আমরা মনে করি তিনি অবশ্যয় সত্যি কথা বলেছেন। তাঁর এ বক্তব্যের স্বপক্ষে তিনি দালিলিক প্রমাণও দিয়েছেন।
বিএনপির মুখপাত্র অভিযোগ করেন, সাকা চৌধুরীকে নাগরিক হিসেবে মৌলিক ও মানবাধিকার দেওয়া হয়নি।
আসাদুজ্জমান বলেন, আগামী শনিবার বিকেল পাঁচটায় খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষ হয়নি। এরপরও দেশের সংকট ও ক্রান্তিকাল বিবেচনায় তিনি দেশে ফিরে আসছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, প্রথমে এই প্রতিবেদনটি ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বে সাকা চৌধুরীর ‘কন্ট্রিবিউশন’ ছিল: বিএনপি’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি কন্ট্রিবিউশন বলেননি, বলেছেন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ‘কমিটমেন্ট’ ছিল।