‘একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বিএনপির নেতারা ৭ মার্চ পালন করেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের অনুরোধ জানাব, এত দিন ধরে যে ইতিহাস বিকৃতি করেছেন তার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চান। নতুন করে ইতিহাস বিকৃতির জন্য কোনো দিবস পালন করার ভণ্ডামি দয়া করে করবেন না।’
মন্ত্রী বিএনপিকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘স্কুলের দপ্তরিকে হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করবেন না। ইতিহাসকে মেনে নিয়েই রাজনীতিটা করুন। ক্রমাগতভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করবেন না।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন ঘোষণা দিল যে তারা ৭ মার্চ পালন করবে, আমি আশা করেছিলাম ইতিহাসকে মেনে নেওয়ার শর্তে এবং এত দিন ধরে তারা যে ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে, সেই কলঙ্কমোচনের স্বার্থে তারা ৭ মার্চ পালন করবে। কিন্তু ৭ মার্চ পালন করতে গিয়ে যে বক্তৃতাগুলো তাঁরা করেছেন, যেভাবে ভাষণ দিয়েছেন, তা বরং ৭ মার্চের বক্তব্যের সারমর্মকে খাটো করার জন্যই। অর্থাৎ একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা ৭ মার্চ পালন করেছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, এ ধরনের কটাক্ষ করার উদ্দেশ্য নিয়ে দিবস পালন করবেন না। আপনারা ক্রমাগতভাবে ইতিহাস বিকৃত করেছেন। এই ভাষণ ২১ বছর বাজাতে দেননি। কিন্তু এই ভাষণকে আজকে বিশ্ব স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের দলিল হিসেবে এই ভাষণ স্থান পেয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ অফিসের প্রয়াত বেয়ারা নূরুল হক, তিনি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার পর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি রিকশায় করে সমগ্র চট্টগ্রাম শহরে মাইকিং করেছিলেন। চট্টগ্রাম শহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তখন হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে, যেকোনো মুহূর্তে তাঁর বুকে গুলি হতে পারে, সেটা জেনেও সেদিনকার তরুণ নূরুল হক মানুষকে ঘোষণাটি শুনিয়েছিলেন। আর ২৬ মার্চ সকাল থেকে তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান স্বাধীন বাংলা বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করে শুনিয়েছিলেন। আর জিয়াউর রহমান পাঠ করেছিল ২৭ মার্চ। বিএনপিকে অনুরোধ জানাব এই সত্যগুলো মেনে নেওয়ার। স্কুলের দপ্তরিকে হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করবেন না। ইতিহাসকে মেনে নিয়েই রাজনীতিটা করুন। ক্রমাগতভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করবেন না।’
ঢাকা মহানগর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সভাপতি কে এম শহিদ উল্যার সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, নাজমুল হক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিব মো. মাসুদ করিমসহ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সভা শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।