বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভোটের দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘নির্বাচনে আমরা বাধা দিতে পারিনি। সে জন্য বারবার ছুটে গেছি বিভিন্ন জায়গায়। বলেছি জেগে উঠুন, আপনার অধিকার আপনারা রক্ষা করুন। আমরা রক্ষা করতে পারিনি। কেন পারিনি? পারিনি এ জন্য যে আমরা সুশৃঙ্খল নই। আমরা মরার আগে মরে যাই।’
ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার বিকেলে নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল প্রশ্ন করেন, ‘কেন মরে যাই? কেন রুখে দাঁড়াচ্ছি না? আমার দেশ, এই মাটি আমার। আমি এর মালিক। জনগণ এর মালিক। জনগণের পয়সায় তারা সরকার চালাবে। আমাদের খাবে, আমাদের পরবে আমাদের বুকের ওপর গুলি চালাবে? ক্ষোভ হয় না? রাগ হয় না? উত্তেজনা হয় না?’
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এখানে তরুণদের মাঝে যে ক্ষোভ দেখলাম, যে উচ্ছ্বাস দেখলাম, এই ক্ষোভকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। এরা চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এরা ইতোমধ্যে জনগণের শত্রু হয়ে গেছে। সুতরাং তাঁদের পরাজিত করতে আপনাদের যা প্রয়োজন তা শুধু ঐক্য, ঐক্য, ঐক্য। জনগণের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা তাঁদের পরাজিত করতে পারব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আন্দোলন তৈরি করে তাদের পরাজিত করার সুযোগ আমরা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম। তা আমরা পারলাম না। তাই বলে কি সব শেষ হয়ে গেছে? হয়নি। কিছুই শেষ হয়নি। আমরা আবার রুখে দাঁড়াব, আমরা আবার উঠে দাঁড়াব।’
দশম সংসদের মেয়াদ ফুরোনোর আগে একাদশ সংসদের সদস্যদের শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে ‘বেআইনি’ কাজ হয়েছে বলে দাবি করেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘উনি তড়িঘড়ি করে শপথ নিয়েছেন। আপনি তো ভোটে জিতেন নাই। আপনার শপথ নেওয়া বেআইনি। এই সংসদের মেয়াদ আছে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত, সেই সংসদ বাতিল করেছে, এটা আমি কোনো পত্রিকায় দেখি নাই।’
আ স ম রব দাবি করেন, ‘তাহলে বাংলাদেশে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সংসদ সদস্য হলো ৬০০ জন। ওই সংসদ বাতিল না করে কীভাবে শপথ নিলেন আপনারা? এই শপথ বেআইনি ও অবৈধ। আপনার শপথ সংবিধানবিরোধী ও নীতি-নৈতিকতা বিরোধী।’
জেলা বিএনপির সভাপতি এ জেড এম গোলাম হায়দারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।