>• ওসির বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে
• ওসি বলছেন, বক্তব্য সম্পাদনার মাধ্যমে বিকৃত করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে
• ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসপিকে জানানো হয়েছে
‘আমি প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপনাদের একটি কথা বলতে চাই, আপনারা আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে ভোট দেবেন, নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।’ সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। তাঁর এ বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মারুফ আহমেদ গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁর বক্তব্য সম্পাদনার মাধ্যমে বিকৃত করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম মোস্তফা কামাল জানান, ওসি মারুফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে (এসপি) জানানো হয়েছে।
ডিসির সুপারিশের বিষয়টি নিশ্চিত করে এসপি মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ওসি মারুফ যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। এটি পুলিশ বিভাগের মত নয়। তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে কলারোয়া উপজেলার জি কে এম কে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শারীরিক কসরত প্রদর্শনীর আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ওসি মারুফ আহমেদ। বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি ‘শেখ হাসিনাকে আমাদের সভানেত্রী’ উল্লেখ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আপনার একটি ভোট অতি মূল্যবান। আপনার ভোটটি সযত্নে সুযোগ্য জায়গায় দিয়ে আপনার অবস্থান জানান দেবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে সরকারের এই উন্নয়নের ধারা যাতে অব্যাহত থাকে, এ জন্য আপনার সহযোগিতা একান্ত কাম্য।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ, সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্যসচিব মোশফিকুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম বলেন, সরকারি কর্মচারী ওসি মারুফ এভাবে কোনো দলের পক্ষে ভোট চাইতে পারেন না। নৌকায় ভোট চেয়ে তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। ওসির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গত তিন দিন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে তিনি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।