সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস) পদ থেকে বড় ছেলে আয়মন আকবর ওরফে বাবলু চৌধুরীকে বাদ দেওয়ার পর এই প্রথম নিজ নির্বাচনী এলাকা সফর করছেন জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী। এবার তাঁর সফরসঙ্গী হয়েছেন ছোট দুই ছেলে ও একমাত্র মেয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দুটি মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিয়েছেন ছোট ছেলে শাহদাব আকবর চৌধুরী।
নেতা-কর্মীরা বলছেন, এলাকার রাজনীতিতে সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে শাহদাবের সংশ্লিষ্টতা বাড়ছে। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, এখন থেকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন শাহদাব। তিনিই হচ্ছেন তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসূরি।
গত বুধবার বেলা দেড়টার দিকে হেলিকপ্টারে করে নগরকান্দায় আসেন সাজেদা চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে আছেন ছোট ছেলে শাহদাব আকবর চৌধুরী, মেজ ছেলে সাজেদ আকবর চৌধুরী ও মেয়ে শামা রহমান। পরে তাঁরা সালথা উপজেলার রসুলপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে যান। গতকাল সকালে বাড়ি প্রাঙ্গণে ও বিকেলে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনদের নেতা-কর্মীদের নিয়ে দুটি মতবিনিময় সভা হয়। এসব সভায় সাজেদা চৌধুরী ছাড়াও বক্তব্য দেন শাহদাব আকবর চৌধুরী। বক্তব্য না দিলেও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাজেদ আকবর চৌধুরী ও শামা রহমান।
বক্তারা আয়মন আকবরের বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, আয়মন আকবরকে তাঁরা আর নগরকান্দা ও সালথার রাজনীতিতে দেখতে চান না। তিনি রাজনীতি কলুষিত করে দিয়েছেন। তাঁর কারণে এখানে ভোটারের চেয়ে নেতা বেশি হয়ে গেছে। দলে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। হামলা-মামলায় নেতা-কর্মীরা জর্জরিত। জেলা কারাগার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীতে ভরে গেছে।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে সভায় কোনো মন্তব্য করেননি সাজেদা চৌধুরী। ছোট ছেলের নাম উল্লেখ না করলেও তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে আছেন। এলাকার ছেলেরা আছেন। সবাই মিলেমিশে আধুনিক নগরকান্দা ও সালথা গঠনে একসঙ্গে কাজ করবেন।’
আয়মন আকবর গতকাল বলেন, ‘আমার ভাই (শাহদাব) আম্মাকে ছিনতাই করে নিয়ে আটকে রেখেছেন।’ মতবিনিময় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যাঁরা আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাঁরা বিভিন্ন সময় আম্মাকে নিয়ে ফায়দা লুটে বিতর্কিত করেছেন। আমি তাঁদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দিইনি বলে তাঁরা এ কথা বলছেন।’
গতকাল রাতে শাহদাব আকবর চৌধুরী বলেন, ‘আম্মা ও পরিবারের সিদ্ধান্তে আমি সালথা-নগরকান্দা এলাকায় মায়ের রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। এ কারণে বড় ভাই ছাড়া অন্য দুই ভাই ও বোনসহ আম্মাকে নিয়ে এখানে এসেছি। আগে বড় ভাই আয়মন আকবর চৌধুরী এখানে একই দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর কর্মকাণ্ডের সময় এখানে হামলা-মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জর্জরিত ছিলেন। নেতা-কর্মীরা বিভক্ত ছিলেন। নির্বাচনের আর আছে ৭-৮ মাস। মা প্রায় ৬০ বছর ধরে রাজনীতি করছেন। এই শেষ সময়ে তাঁকে জয়ী করতে পরিবেশ তৈরি করার জন্যই তিনি সবাইকে নিয়ে এখানে এসেছেন। মাকে বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসার অভিযোগ যুক্তিহীন ও হাস্যকর। তবু বড় ভাই যেহেতু এ দাবি করেছেন, তাই আর কিছু বলব না। এখানে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনীতি করতে চাই।’