ক্ষমতাসীন দলের পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের হুমকি-ধমকিতে ‘আতঙ্কিত’ বলে জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে অর্থ বিল পাসের আলোচনায় হারুন এ কথা বলেন। এর আগে হারুনের সঙ্গে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমানের বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে মসিউর বলেন, তিনি হারুনকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দেবেন।
গত জানুয়ারিতে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেও বিএনপির সদস্য হারুনের বক্তব্যে নাখোশ হয়ে মসিউর রহমান বলেছিলেন, সংসদের লবিতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তিনি দায়ী থাকবেন না।
আজ অর্থ বিল পাসের আলোচনায় হারুন অভিযোগ করেন, তাঁদের যথেষ্ট সময় দেওয়া হয় না। বন্যা, দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েও বিএনপি সময় পায়নি। তিনি বলেন, বিশেষ অধিকারের নোটিশ আলোচনার জন্য তাঁকে দুই মিনিটে বক্তব্য শেষ করতে সতর্ক করেন স্পিকার।
আগের দিন ক্ষমতাসীদলীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বক্তব্যের (বিএনপির সমালোচনা করেছিলেন) প্রসঙ্গ টেনে হারুন বলেন, ‘আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য। আমরা কথা বলতে গেলে এতে যদি আপত্তি ও বাধা থাকে, তাহলে বলেন, আমরা সংসদ ছেড়ে চলে যাই।’
হারুনের বক্তব্যের সময় সরকারি দলের সদস্যরা হইচই করেন।
হারুনের অভিযোগের জবাবে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘এক মিনিট কেন, আপনাকে চার মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে। কথা বলার সময় খেয়াল থাকে না। আপনাদের প্রাপ্য সময়ের তুলনায় বেশি সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি।’
এরপর বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে মসিউর রহমান স্পিকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘একজন বিরোধীদলীয় সদস্য আপনাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছেন। অন্য কোনো স্পিকার হলে তাঁর মাইকই বন্ধ করে দিতেন।’
পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপির কেন এত গাত্রদাহ, এমন প্রশ্ন রেখে মসিউর রহমান বলেন, ‘আমরা বিরোধী দল থেকে তো চাইব সরকারকে উৎখাত করতে। কিন্তু আল্লাহ না চাইলে কীভাবে উৎখাত করব। প্রধানমন্ত্রী এখন দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় ব্যক্তি। পদ্মা সেতুতে এমন জনপ্রিয়তা বেড়েছে, যাতে বিএনপির মতো জাতীয় পার্টিকেও থালা নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।’
এ সময় মাইক ছাড়াই হারুন টিপ্পনী কেটে বলেন, ‘এখন সময় বাড়িয়ে দেন।’ এর জবাবে মসিউর বলেন, ‘আপনাকে কি চিফ হুইপের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নাকি?’
স্পিকারের উদ্দেশে মসিউর বলেন, ‘উনি (হারুন) যখন কথা বলবেন, আমি কিন্তু কথা বলব, ওনাকে কথা বলতে দেব না।’
পরে সংশোধনীর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির হারুন বলেন, ‘এখানে অনেক বিষয় এসেছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন দলকে বিরোধী দলে এনে বসিয়েছেন, আমি জীবনেও এ ধরনের আলোচনা শুনি নাই। যে ধরনের হুমকি–ধমকি দেওয়া হচ্ছে, আমি সত্যি আতিঙ্কত। এই সংসদে সাড়ে ৩০০ সদস্য, আমরা মাত্র কয়েকজন। এত যদি হুমকি–ধমকি দেন, আমরা তো চ্যাপটা নয়, ভর্তা হয়ে যাব।’