শনিবার বেলা তিনটায় সীতাকুণ্ড উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর পথসভা হওয়ার কথা ছিল। এ লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের সভামঞ্চ প্রস্তুত আর সাজসজ্জার কাজও শেষ। সভায় নিরাপত্তা দিতে জেলা থেকে আসা অতিরিক্ত পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) নিয়ে সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশ সভাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। নেতা-কর্মীরাও আসতে শুরু করেছেন। কিন্তু দুপুর ১২টায় খবর আসে সীতাকুণ্ডের পথসভা হচ্ছে না।
অথচ দুই দিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভক্ত তিনটি পক্ষ একজোট হয়ে সীতাকুণ্ড উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সভামঞ্চ তৈরিসহ বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেছিল। সভা বাতিলের খবর শুনে তাই হতাশ দলের নেতা-কর্মীরা।
মূলত সাংসদ দিদারুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম আল মামুন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল বাকের ভুইয়ার মধ্যে ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের কারণে সভাটি হয়নি বলে নেতা-কর্মীদের কথায় স্পষ্ট হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ ইসহাক দাবি করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংসদকে বাদ দিয়ে পথসভা করতে চায়। এমনকি তাঁর সমর্থিত পাঁচজন চেয়ারম্যান ও একজন মেয়রকেও দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কার কথা কেন্দ্রকে জানানো হয়। পরে কেন্দ্র থেকে সভাটি বাতিল করা হয়।
সভা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংসদ দিদারুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সভা সম্পর্কে জানি না। মন্ত্রী আমাকে প্রোগ্রাম দেননি। উপজেলা আওয়ামী লীগও আমাকে জানায়নি। সেদিন (গত বুধবার) সভার প্রস্তুতির জন্য জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ ছালাম গিয়েও প্রস্তুতি সভা করতে পারেনি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল বাকের ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সাংসদসহ সীতাকুণ্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ ছালাম বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে সভা আয়োজনের খরচের কিছু অংশ তাঁকেও (সাংসদ) দিতে বলা হয়েছে। অথচ তিনি বলছেন তিনি জানেন না।
সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুনও দায় চাপালেন সাংসদ দিদারুলের ওপর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সভা না হওয়া সীতাকুণ্ডের রাজনীতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য বিষয়টি বিব্রতকর।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ ছালাম প্রথম আলোকে বলেন, ফেনীর পথসভা শেষ করে সীতাকুণ্ডের পথসভায় যোগ দিতে রাত হয়ে যাবে। রাতের বেলায় সীতাকুণ্ডে সভা করতে তাঁরা আগ্রহী নন। তাই কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে সীতাকুণ্ডের সভাটি বাতিল করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড থানার সেকেন্ড অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, পথসভাটির নিরাপত্তা দিতে জেলা পুলিশ লাইন থেকে ৫০ জন অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছিল। এ ছাড়া ছিল গোয়েন্দা পুলিশও। কিন্তু সভা না হওয়ায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।