কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নোটিশে তিনি হতবাক হয়েছেন। দলের ভাইস চেয়ারম্যানকে ‘ভুল তথ্য’ দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রটোকল ও সৌজন্যের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলেও মনে করেন হাফিজ উদ্দিন।
আজ শনিবার রাজধানীর বনানীর নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
এই কারণ দর্শানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নেতা-কর্মীদের অনুরোধে আপাতত পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনের আগেই তিনি কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন জানিয়ে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাখ্যায় দল সন্তুষ্ট কি না, সেটা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। সংবাদ সম্মেলনে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ভূমিকারও ব্যাখ্যা দেন তিনি।
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘আমি একজন যুদ্ধাহত, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। বিজয়ের মাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে অসৌজন্যমূলক ভাষায় অসত্য অভিযোগসংবলিত কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে হতবাক হয়েছি। দলের ভাইস চেয়ারম্যানকে একজন যুগ্ম মহাসচিব (আদিষ্ট না হয়েও) এমন কঠিন, আক্রমণাত্মক ভাষায় কৈফিয়ত তলব করায় অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি। এখানে প্রটোকল ও সৌজন্যের ব্যত্যয় ঘটেছে।’
বিএনপি নেতা হাফিজ বলেন, ‘আমি ২৯ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, আমার যোগদানের তারিখ, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়ার তারিখ, আমার নামের বানানসহ অনেক ভুলই রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে দৃশ্যমান।’
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোণঠাসা করে রাখার জন্য একটি মহল সক্রিয় রয়েছে।
এ ছাড়া আগামী মার্চের মধ্যে দলের জাতীয় কাউন্সিল আহ্বান করা, দলের বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি–বাণিজ্য ও মানোন্নয়ন–বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্ত করাসহ কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরেছেন।
১৪ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভা ছিল। অনুষ্ঠান শেষে বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটি দল পুরানা পল্টন মোড় ও জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের কেউ কেউ মনে করেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত করে এ ধরনের বিক্ষোভ করার পেছনে হাফিজ উদ্দিন ও শওকত মাহমুদ দায়ী। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় দুজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএনপি। তাতে শওকত মাহমুদকে ৭২ ঘণ্টা ও হাফিজ উদ্দিনকে ৫ দিনের সময় দেওয়া হয়। নোটিশে সই করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্র বলছে, শওকত মাহমুদ গত বুধবার রাতেই জবাব দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শের বাইরে, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজে তিনি জ্ঞাতসারে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এরপরও তাঁর অজান্তে কোনো কাজে জড়িত থাকলে তার জন্য তিনি দুঃখিত।
অন্যদিকে মেজর হাফিজ আজ তাঁর অবস্থান জানালেন। তাতে বিএনপিকে কারণ দর্শানোর নোটিশে কী বলেছেন, তাও উল্লেখ করেছেন।