ভোট গ্রহণের নির্ধারিত আট ঘণ্টা সময়ের অর্ধেক পার হওয়ার আগেই তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এসব প্রার্থী রাঙামাটির নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি ও কাউখালী উপজেলার।
আজ সোমবার দেশের ১১৬টি উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ চলছে। আজ বেলা ১১টার দিকে প্রথম বাঘাইছড়ি উপজেলায় আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতির প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা, দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমিতা চাকমা ও সমীরণ চাকমা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
বড়ঋষি চাকমা আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য ভোট দাঁড়িয়েছিলাম। তবে কাল থেকেই পরিস্থিতি অন্য রকম হয়ে যায়। এলাকায় বহিরাগতরা এসে ভিড় জমায়।’
বাঘাইছড়ি উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সুদর্শন চাকমার বিরুদ্ধেই ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছেন বড়ঋষি। তাঁর দাবি, সুদর্শন এখানে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। পাহাড়ি এলাকায় সুদর্শনের লোকজন এবং বাঙালিপাড়ায় আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা কেন্দ্র দখল ও ভোটারদের আসতে বাধা দিচ্ছে।
বড়ঋষি চাকমার অভিযোগ, সংসদ নির্বাচনের মতো গতকাল রোববার রাতে ৮ থেকে ১০টি কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ভরিয়ে ফেলেছে। তিনি এবং বাকি দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নতুন করে ভোট গ্রহণের দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে সুদর্শন চাকমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। আর বাধা দেওয়ার বিষয়ে বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলী হোসেন বলেন, বর্জন সংস্কৃতি জেএসএসের পুরোনো রোগ। এখানে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাঁরা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এটা বর্জন করেছেন।
এদিকে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী অর্জন মণি চাকমা ভোট বর্জন করেছেন। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, নৌকা মার্কার প্রার্থী প্রশাসনিক সহযোগিতা নিয়ে ভোট জালিয়াতি করেছেন। ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
নানিয়ারচর উপজেলায় পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চার চেয়ারম্যান প্রার্থীই আজ ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী জনতিনা চাকমা বলেছেন, তাঁর সমর্থকেরা ভোট দিতে পারছেন না। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রগতি চাকমার বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতি এবং জোর করে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেন তিনি।
তবে প্রগতি চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘কে বর্জন করেছে, তা তো জানি না। ভোট স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে। কোনো সমস্যা তো নেই।’
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাফি কামালের অধীনে আছে নানিয়ারচর উপজেলা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রার্থীদের কারও কাছে থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তো পাইনি। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে, কোথাও কোনো হাঙ্গামা নেই। প্রার্থীরা আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ জানাননি।’