প্রায় আট মাস পর ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। কিন্তু তিনি গুলশানের বাসায় ওঠেননি; বিমানবন্দর থেকে তাঁকে সরাসরি গুলশানের একটি হোটেলে নেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন রওশন এরশাদ।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রওশন এরশাদ ৩০ জুন জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে অংশ নিতে চান। এরপর তিনি আবার চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে যাবেন।
আজ সোমবার দুপুরে ব্যাংক থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান রওশন এরশাদ। এ সময় জি এম কাদেরসহ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী তাঁকে স্বাগত জানান।
রওশন এরশাদের সঙ্গে ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ ও ছেলের স্ত্রী মাহিমা এরশাদও দেশে ফিরেছেন।
রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ আম্মু ভালো আছেন। আম্মুকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনার জন্য বামরুনগ্রাদ হাসপাতাল থেকে একজন নার্সও এসেছেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রওশন এরশাদের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতি হলেও এখনো তিনি বেশ দুর্বল। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
এদিকে প্রায় আট মাস পর আজ রওশন এরশাদের দেশে ফেরা উপলক্ষে বিমানবন্দরসহ এলাকায় কয়েক হাজার নেতা-কর্মী সমবেত হন। অনেকে পোস্টার, ব্যানার, প্ল্যাকার্ডসহ বিমানবন্দর সড়কে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার নিয়ে অবস্থান নেন। তাঁরা মিছিল নিয়ে রওশন এরশাদকে স্বাগত জানান। এ সময় বিমানবন্দর সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
রওশন এরশাদকে দেখতে ব্যাংকক গিয়েছিলেন জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের। গতকাল রোববার দেশে ফিরে আজ রওশনকে স্বাগত জানাতে তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিমানবন্দরে যান।
জি এম কাদের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিরোধীদলীয় নেতার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। যাঁরা ওনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ইচ্ছুক, তাঁরা যেন বিরোধীদলীয় নেতার অনুমতি সাপেক্ষে এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে যোগাযোগ করেন।
রওশন এরশাদকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপার কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন, সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া, ফখরুল ইমাম, মসিউর রহমান, সুনীল শুভ রায়, মীর আবদুস সবুর, শফিকুল ইসলাম, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, শেরীফা কাদের, রওশন আরা মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব আশিক আহমেদ প্রমুখ।
রওশন এরশাদ ময়মনসিংহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য। ছেলে সাদ এরশাদ রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং দলের যুগ্ম মহাসচিব।
গত ১৪ আগস্ট রওশন এরশাদকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ২০ অক্টোবর থেকে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। সর্বশেষ তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় অক্সিজেনের স্তর ওঠানামা করছিল। এ পরিস্থিতিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৫ নভেম্বর তাঁকে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর আগে আড়াই মাসেরও বেশি সময় তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।