সকাল থেকেই বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ছাপিয়ে জনসমুদ্রে পরিণত। লক্ষ্য একটাই, নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মাশরাফিকে একনজর দেখা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি যখন বাসা থেকে বের হয়ে পাশের নির্বাচনী অফিস তাহেরা কনভেনশনে যান, তখন সেখানে সাধারণ মানুষের ঢল। ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ীর পর গতকাল সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে প্রথম মতবিনিময় করেন। নির্বাচনের আগে তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাসযোগ্য স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে নড়াইলবাসীকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। সেই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগব্যবস্থা, খেলাধুলার উন্নয়নসহ মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখতে চান।
এক প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, নির্বাচনী গণসংযোগের সময় জেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাটের দুরবস্থা দেখেছেন তিনি। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হলে এলাকার উন্নয়ন দ্রুত সম্ভব। তাই যোগাযোগের ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নে কাজ করতে চান।
নড়াইলকে একটি মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে যা কিছু করণীয়, মাশরাফি তা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে করার প্রতিশ্রুতি দেন। ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নয়নের ব্যাপারে তিনি বলেন, বেসরকারিভাবে ইতিমধ্যে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন থেকে ক্রিকেট, ফুটবল ও ভলিবল খেলার উন্নয়নে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের কাজ চলছে। তিনি মনে করেন, এতে তরুণ সমাজ চাকরি, কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং তারা মাদক থেকে দূরে থাকবে।
খেলার মাঠ আর রাজনীতির মাঠের মাশরাফির মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, দেশের জন্য যেমন খেলেছেন, তেমনি রাজনীতিক হিসেবে দেশের সেবা করতে চান। নির্বাচনে তাঁকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার জন্য নড়াইলবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে মাশরাফি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস বোস, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিপিএল খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য মাশরাফি সপরিবারে আজ মঙ্গলবার ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
নির্বাচনে মাশরাফি ২ লাখ ৭১ হাজার ২১০ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যফ্রন্টের ফরিদুজ্জামান পেয়েছেন ৭ হাজার ৮৮৩ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৭ হাজার ৮৪৪।