রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ফখরুল ইসলাম আলমগীর
রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ

যেকোনো সভ্য দেশ জাতীয় শোক ঘোষণা করত: ফখরুল

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন-বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় ‘জাতীয় শোক’ ঘোষণা করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময়কালে মির্জা ফখরুল এই মন্তব্য করেন।

‘জাতীয় শোক’ ঘোষণা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যেকোনো সভ্য দেশ হলে তা–ই করত। দেখুন, আমেরিকাতে যে বাচ্চাগুলো মেরে ফেলল, সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকা জাতীয় শোক ঘোষণা করল।’

জাতীয় শোক ঘোষণা না করে এই সময়ে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘মানুষ যখন এই দুঃসময়ে একটু সান্ত্বনা আশা করে, তখনই গ্যাসের আরেকটা আজাব এসে গেল।’

গ্যাসের দাম বাড়ছে কেন—এমন প্রশ্ন তুলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দুর্নীতির কারণে। কারণ, গ্যাস আমদানি করছেন ক্ষমতাসীন দলের লোকজন।

সীতাকুণ্ডের ঘটনায় একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার দাবি জানান মির্জা ফখরুল। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিচার বিভাগীয় কমিশন—এগুলো এখন আর চলে না। নিরপেক্ষ মানে দলনিরপেক্ষ, সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এমন বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তদন্ত কমিশন করা।

সীতাকুণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব। আহত ব্যক্তিদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে দেশের সব কনটেইনার ডিপোতে ‘তদারকি ব্যবস্থা’ চালুর দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব।

সীতাকুণ্ডের ঘটনায় দেশের পোশাকশিল্পে অথবা অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অলরেডি এ নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে।

সীতাকুণ্ডের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল একজন কর্মকর্তার কথা টেলিভিশনে শুনছিলেন তিনি। সেই কর্মকর্তা বলছিলেন, তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। এই জায়গাতেই তিনি প্রশ্ন করতে চান। এই সরকার তাহলে কী করছে?

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমি যে কথাটা বলছি, তথাকথিত অবকাঠামো নির্মাণের নামে নিজেদের পকেট ভারী করা, দুর্নীতি করা—এটাই তাদের (ক্ষমতাসীন দল) মূল লক্ষ্য। জনগণের কল্যাণের জন্য, জনগণের সেফটি-সিকিউরিটির জন্য, মানুষকে ভালো রাখার জন্য এই সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। এই সরকার যেহেতু নির্বাচিত সরকার নয়, সে কারণে তাদের জবাবদিহি নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের সক্ষমতা শুধু একটা জায়গায়, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা, মিথ্যা কথা বলা, একটা ভাবের জগতে বাস করানো। যখন দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, তখন সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, দেশে কোনো অভাব নেই, দেশ এখন ইউরোপ-আমেরিকা হয়ে গেছে। যেটার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।

সীতাকুণ্ডের ঘটনার জন্য সরকারের ব্যর্থতা দায়ী বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখন বাংলাদেশের সামনে একমাত্র পদ্মা সেতু ছাড়া আর কিছুই নেই।