ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে সমালোচনা করায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এ বি এম নুরুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে গতকাল শুক্রবার ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেওয়া হয়। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ৫ মে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোট ১২৭টি ভোট কেন্দ্রের সব কটিতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। ৭ মে বিকেলে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোট নেওয়ার বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এ বি এম নুরুজ্জামান খোকন নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ব্যালটে ভোট চুরি করা যায়, আর ইভিএমে করা যায় ডাকাতি।’ ফেসবুকে তাঁর এই স্ট্যাটাসকে তিনি ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে উল্লেখ করেন। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরপর নুরুজ্জামান খোকনের এই স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়ে। তাঁর এ ধরনের মন্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতারা বিপাকে পড়েন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বি এম নুরুজ্জামানের এ মন্তব্যকে সরকার ও দল বিরোধী অবস্থান বলে উল্লেখ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের স্ট্যাটাস দেওয়ার পর তিনি এটি নিজের দেওয়া স্ট্যাটাস বলে স্বীকার করেছেন। দায়িত্ব নিয়েই তিনি এ স্ট্যাটাস দিয়েছেন বলেও জানান। নুরুজ্জামান খোকন গত সংসদ নির্বাচন ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন, আবার নিজের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব কারণে নুরুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগকে অনুরোধ করা হচ্ছে বলে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ উল্লেখ করেছে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি কর্মকাণ্ড ও দলের সমালোচনা করায় নুরুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা স্বেচ্ছাসেবক লীগকে অনুরোধ করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে এ বি এম নুরুজ্জামান খোকন বলেন, ‘যখন আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি, তখন জেলা আওয়ামী লীগের কেউ আমাকে তা ডিলিট (মুছে ফেলা) করতে বলেননি। যাঁরা আমাকে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস করতে চান, তাঁরা বিষয়টিকে জিইয়ে রেখে ইস্যু করতে চেয়েছেন। তবে আমার শেকড় এত দুর্বল না।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইকরামুল হক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।